পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-চতুর্থ সংস্করণ.pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রহলোক b-> এই গ্রহে যে-পরিমাণ বস্তু আছে তা পৃথিবীর বস্তুমাত্রার দশ ভাগের একভাগ, তাই টানবার শক্তিও সেই পরিমাণে কম । সূর্যের টানে মঙ্গল গ্রহের ঠিক যে-পথ বেয়ে চলা উচিত ছিল, তার থেকে ওর চাল একটু তফাৎ। পৃথিবীর টানে ওর এই দশা । ওজন অনুসারে টানের জোরে পৃথিবী মঙ্গলগ্রহকে কতখানি টলিয়েছে সেইটে হিসেব ক’রে পৃথিবীর ওজন ঠিক হয়েছে । এষ্টসূত্রে সূর্যের দূরত্বও ধরা পড়ল । কেননা মঙ্গলকে সূর্যও টানছে পৃথিবীও টানছে, সূর্য কতটা পরিমাণে দূরে থাকলে দুই টানে কাটাকাটি হয়ে মঙ্গলের এইটুকু বিচলিত হওয়া সম্ভব সেটা গণনা ক’রে বের করা যেতে পারে। মঙ্গলগ্রহ বিশেষ বড়ো গ্রহ নয়, তার ওজনও অপেক্ষাকৃত কম সুতরাং সেই অনুসারে টানের জোর বেশি না হওয়াতে তার হাওয়া খোওয়াবার আশঙ্কা ছিল । কিন্তু সূর্য থেকে যথেষ্ট দূরে আছে ব’লে এতটা তাপ পায় না যাতে হাওয়ার অণু গরমে উধাও হয়ে চলে যেতে পারে । মঙ্গল গ্রহের হাওয়ায় আকসিজেন সন্ধানের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে । সামান্ত কিছু থাকতে পারে । মঙ্গল গ্রহের লাল রঙে অনুমান হয় সেখানকার পাথরগুলো অক্সিজেনের সংযোগে সম্পূর্ণ মরচে পড়া হয়ে গেছে । আর জলীয় বাম্পের যা চিহ্ন পাওয়া গেল ত৷ পৃথিবীর জলীয় বাম্পের শতকরা পাঁচভাগের একভাগ । মঙ্গল গ্রহের হাওয়ায় এই যে অকিঞ্চনতার লক্ষণ দেখা যায় বোঝা যায় পৃথিবী ক্রমে ক্রমে একদিন আপন সম্বল খুইয়ে এই দশায় পৌছবে । \()