পাতা:বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়

এই বহুশাখায়িত পরিব্যাপ্ত ধারাকে কোনো কোনো সুনির্দ্দিষ্ট কেন্দ্রস্থলে উৎসরূপে উৎসারিত করে দিতে, সর্ব্বসাধারণের স্নানের জন্য, পানের জন্য, কল্যাণের জন্য।

 এই ইচ্ছাটি যে কীরকম সত্য ছিল, কীরকম উদার, কীরকম বেগবান ছিল, তার প্রমাণ পাওয়া যায় এই অনুষ্ঠানের মধ্যেই, এর অকৃপণ ঐশ্বর্য্যে। বিখ্যাত চৈনিক পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ বিস্ময়োচ্ছ্বাসিত ভাষায় এই বিদ্যানিকেতনের বর্ণনা করেছেন। তাঁর লেখনীচিত্রে দেখতে পাই, এর অলঙ্করণ-রেখায়িত শুক্তিরক্তস্তম্ভশ্রেণী, এর অভ্রভেদী হর্ম্ম্যশিখর, ধূপসুগন্ধি মন্দির, ছায়ানিবিড় আম্র বন, নীলপদ্মে প্রফুল্ল গভীর সরোবর। তিনটি বড়ো বড়ো বাড়িতে এখানকার গ্রন্থাগার ছিল। তাদের নাম রত্নসাগর, রত্নদধি, রত্নরঞ্জক। রত্নদধি নয়তলা; সেইখানে প্রজ্ঞাপারমিতাসূত্র এবং অন্যান্য শাস্ত্রগ্রন্থ রক্ষিত ছিল। বহু রাজা পরে পরে এই সঙ্ঘের বিস্তার সাধন করেচেন, চারিদিকে উন্নত চৈত্য উঠেচে, সেই চৈত্যগুলির মধ্যে মধ্যে শিক্ষাভবন, তর্কসভা-গৃহ, প্রত্যেক সরোবরের চারিদিকে বেদী ও মন্দির, স্থানে স্থানে শিক্ষক ও প্রচারকদের জন্যে চারতলা বাসস্থান। এখানকার গৃহনির্ম্মাণে কীরকম সযত্ন সতর্কতা সেই প্রসঙ্গে ডাক্তার স্পুনার বলেন―আধুনিক কালে যে-রকমের ইঁট ও গাঁথুনি প্রচলিত, এখানকার গৃহনির্ম্মাণের উপকরণ ও যোজনাপদ্ধতি তার