প্রবাসী-গ্রামবাসী সংবাদ
নিকোলাই। আমি গোড়াতেই ভেবেছিলাম, সমবায়ভুক্ত হব; কিন্তু গিন্নি বেঁকে বসল, বললে তাহলে গলায় দড়ি দেবে, তাই হল না। শেষে আমার সব কেড়ে কুড়ে নিলে, রাখার মধ্যে মন কতক খাবার দানা আর দুচার বস্তা আলু রেখে গেল। এখন সমবায়ে ঢুকে নির্বাসন থেকে বেঁচেছি।
এইটুকু বলে নিকোলাই সরে পড়ল।
এক বুড়ো। আমাদের নিকোলাইর মতো হিসিবি মানুষ আর দেখা যেত না। রোদ ঝড় জল যাই হোক না কেন সে সমানে রোজগারের ফিকিরে ঘুরে বেড়াত। বিচিলির গাড়ি থেকে দু’এক গাছ পড়ে গেলে ছুটে গিয়ে কুড়িয়ে আনত। আলু তোলার সময় কাঁচা পচা কিছু বাকি রাখত না। আমোদ নেই, আহ্লাদ নেই, শহরে কাজে গেলে শখ করে ময়দার রুটিটুকু মুখে দিত না। এত করে জমানো ধন এ রকম বেঘোরে মেরে নেবে, কে জানত।
অন্য গ্রামের এক সমবায়ী-যুবক এ কথা শুনে আলোচনায় যোগ দিলে।
যুবক। এত করার যে কথা বলছ, এত করে লাভটা হত কার। আশপাশে যারা আধপেটা খেয়ে আছে তাদিকে কি খাওয়াত। নিজেও খেল না, মলে সঙ্গেও যাবে না, তবে কিসের জন্যে জমাল। তার চেয়ে মানুষের মতো থাকলে হত না? তোমাদের নিকোলাইকে চিনিনে, কিন্তু আমাদের গ্রামের কামারটা ঐ রকম ছিল। সে মরার পর ঘর থেকে, গুদম থেকে, চালের ভিতর থেকে কী যে না বেরল, বেশির ভাগ ফেলে দিতে হল। সকলে জানত তার মোহর-ভরা বাক্স আছে। খোজ, খোঁজ, কোথাও পাওয়া যায় না, শেষটা পায়খানার তলার মাটি খুঁড়ে বেরল। কী যাচ্ছেতাই জীবন।
১১৪