বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিশ্বমানবের লক্ষ্মীলাভ.djvu/১৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

চতুর্বর্গের ফল বিচার

তবে সমর্পণ করতে হয়। আমরা এইটুকু বুঝি, প্রেমিকের দেহের অবস্থা যাই হোক, যার আনন্দস্রোত বহির্মুখী তার পুরুষভাব, যে অন্তরে গ্রহণ করে তার নারীপ্রকৃতি। এই দেওয়া-নেওয়ার পৃথক রসকে কি নিগমানন্দ আর আগমানন্দ বললে দোষ হয়। যাই হোক, আলাদা নাম চলতি না থাকলেও রসভেদটা অনুভবে ধরা পড়ে।

 একটি অবস্থার কথা বাকি। দৈবাৎ কখনো অনেকে মিলে পরস্পরের সঙ্গে আনন্দধারার যোগে বেঁধে পড়ে একটা প্রেমচক্র তৈরি হয়। একেই আদর্শ সংঘ বলা যায়। প্রত্যেকের বহির্মুখী ধারা অপরের অন্তরে প্রবেশ করায় এ রকম চক্রের অসীম শক্তি জন্মায়, যার সমবেত টানটা ঊর্ধ্বমুখী। ফলে, চক্রের প্রত্যেকে পথের আনন্দও যেমন পুরো আদায় করে, তাদের উপরে ওঠাও তেমনি জোরে এগোয়। এ রকম ঘটনা মনে করে দয়াল দাদু বলে থাকবেন—“জলের ফোঁটা একা চললে পথে শুখিয়ে যেতে পারে, অন্যের সঙ্গে মিলে ধারা বাঁধতে পারলে নদী হয়ে সমুদ্রে পৌঁছে যায়।” সব সাচ্চার মেকী থাকে, সংঘ বা চক্রে ও তাই। যার গরজ সে অনায়াসে প্রেমের লক্ষণ দেখে আসল চিনে নিতে পারবে।

 প্রেমের লক্ষণ দিয়ে যাচাই করলে অনেক হেঁয়ালির উত্তর পাওয়া যায়, অনেক সমস্যার মীমাংসা হয়। দু একটা নমুনা দেখা যাক।

 এ ভাবনা হওয়া স্বাভাবিক যে শিষ্য তো অজ্ঞান অবস্থায় গুরু খোঁজে, তখন সদ্‌গুরু চিনবে কী করে। প্রেমানন্দই পথ দেখায়। সেটা পেলে কে না বোঝে। তবে ভুল হওয়ারও কারণ আছে। গুরুবাদ সম্বন্ধে লৌকিক অলৌকিক এত রকম গল্পগুজব চলতি আছে, যারা কানপাতলা তাদের অবস্থা সেই বুড়ির মতো হতে পারে, যে ছেলের আলিফ-বে-তে ফারসী বর্ণমালা আওড়ানো শুনে ঠাকুরদেবতার নাম হচ্ছে মনে

১৭৮