আমাকে জ্বালাতন করিও না। আমি তোমার সহিত কথা কহিতে ইচ্ছা করি না।”
এজিদ হাসিয়া বলিলেন, “আচ্ছা, আমার সহিত কথা বল।”
ওমর আলী বলিলেন, “তুমি এমন পবিত্র শরীর ভবধামে অধিষ্ঠান করিয়াছ যে, নিজের গৌরব নিজেই প্রকাশ করিতেছ, তোমার সহিত কথা বলিলে কি আমার গৌরব বৃদ্ধি হইবে?”
“গৌরব বৃদ্ধি হউক, বা না হউক, অতি অল্প সময়ও যদি জগতের মুখ দেখিতে পাওয়া যায়, তাহাতে ক্ষতি কি? তুমি আমার বশ্যতা স্বীকার কর, আমাকে প্রভু বলিয়া মান্য কর, আমি তোমাকে প্রাণদণ্ড হইতে মুক্ত করিতেছি।”
“কি ঘৃণা! কি লজ্জা! এজিদের নিকট ক্ষমাপ্রার্থনা! এজিদের আশ্রয়-গ্রহণ। মাবিয়ার পুত্রের নিকট বশ্যতা স্বীকার! ছিঃ! ছিঃ! তুমি আমার প্রভু হইতে ইচ্ছা কর? তোমার বংশাবলীর কথা, তোমার পিতার কথা, একবার মনে কর। ছিঃ ছিঃ! বড় ঘৃণার কথা! এজিদ, এত আশা তোমার—তুমি আবার মহারাজ!”
এজিদ রোষে অধীর হইয়া বলিলেন,—“জানো, আমি তোমার গর্দ্দান লইতে পারি, তোমাকে খণ্ড খণ্ড করিয়া শৃগাল-কুকুরের উদরস্থও করিতে পারি। তুমি আমার নিকট প্রার্থনা জানাও: “মহারাজ! মহাকষ্টে যেন আমাকে বধ না করা হয়।”
ওমর আলী ক্রোধে বলিলেন, “ধিক্ তোমার কথায়। আর শত ধিক্ আমার জীবনে। ' সহজে প্রাণবধ করা যেন না হয়—ইহাই আমার প্রার্থনা। তোমার যাহা করিবার ক্ষমতা থাকে, কর; আমি প্রস্তুত আছি।”
“মরণের পূর্ব্বে যে, লোকে বিকারগ্রস্ত হয়, এ কথা সত্য। তোমার কপাল নিতান্ত মন্দ, আমি কি করিব?”
“তুমি আর কি করিবে? যাহা করিবে, তাহার দ্বিগুণ ফলভোগ করিবে।”
এজিদ সক্রোধে বলিলেন, “মারওয়ান! ইহার কথা আমার সহ্য় হয়