ዓ መ বীরবলের হালখাতা রবীন্দ্রনাথের লেখার অনুৰুরণ- তাই আবার দোকার করে ইংরেজিতে করতে হবে। ইউরোপে আসল জিনিসটা গ্ৰাহ হচ্ছে বলে নকল জিনিসটিও যে গ্ৰাহ্য হবে, সে আশা দুরাশা মাত্র। ইউরোপ এ দেশে মেকি চালায় বলে আমরাও যে সে দেশে মেকি फांजांड *ांद्मव- qभम उद्मना अiभांद्म 6भई । ফলে, আমরা সাদাকে কালো আর কালোকে সাদা যতই কেন করি নে, আমাদের পক্ষে নোবেল প্রাইজ ছিকেয় তোলা রইল। কিন্তু যদি পাই ? বিড়ালের ভাগ্যে সে ছিকে যদি ছেড়ে । সেও আবার বিপদের কথা হবে। নোবেল প্ৰাইজ পাওয়ার অর্থে শুধু অনেকটা টাকা পাওয়া নয়, সেইসঙ্গে অনেকখানি সম্মান পাওয়া। অনর্থ এ ক্ষেত্রে অর্থ নয়, কিন্তু তৎসংসৃষ্ট গৌরবটুকু। বাংলা লিখে আমরা কী অর্থ কী গৌরব, কিছুই পাই নে। বাংলাসাহিত্যে আমরা ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াই, এবং পুরস্কারের মধ্যে লাভ করি তার চাটুটুকু। স্বদেশীর শুভ-ইচ্ছার ফুলচন্দন কালেভদ্রেও আমাদের কপালে জোটে না বলে ইউরোপ যদি উপযাচী হয়ে আমাদের মাথায় সাহিত্যের ভাইফোটা দেয়, তা হলে তার ফলে আমাদের আয়ুবুদ্ধি না হয়ে হ্রাস হবারই সম্ভাবনা বেড়ে যায়। প্ৰথমেই দেখুন যে, নোবেল প্ৰাইজের তারের সঙ্গেসঙ্গেই আমরা শত শত চিঠি পাব। এবং এই অসংখ্য চিঠি পড়তে এবং তার উত্তর দিতেই আমাদের দিন কেটে যাবে, সাহিত্য পড়বার কিংবা গড়বার অবসর আর আমাদের থাকবে না। এককথায় সমাজের খাতিরে, ভদ্রতার খাতিরে, আমাদের সাহিত্যের ফুলফল ছেড়ে শুধু শুষ্কপত্ৰ রচনা করতে হবে। এই কারণেই বোধ হয় লোকে বলে যে, নোবেল প্ৰাইজ লাভ করার অর্থ হচ্ছে সাহিত্যজীবনের মোক্ষ লাভ করা । আর-এক কথা, টাকাটা অবশ্য ঘরে তোলা যায় এবং দিব্য আরামে উপভোগ করা যায়, কিন্তু গৌরব-জিনিসটে ওভাবে আত্মসাৎ করা চলে না। দেশসুদ্ধ লোক সে গৌরবে গৌরবান্বিত হতে অধিকারী। শাস্ত্রে বলে ‘গৌরবে বহুবচন” ; কিন্তু তার কত অংশ নিজের প্রাপ্য, আর কত অংশ অপরের প্রাপ্য- সে সম্বন্ধে কোনো-একটা নজির নেই ৰলে এই গৌরব-দায়ের ভাগ নিয়ে স্বজাতির সঙ্গে একটা জ্ঞাতিবিরোধের সৃষ্টি হওয়া আশ্চৰ্য নয়। অপর পক্ষে যদি একের সম্মানে সকলে সমান সম্মানিত জ্ঞান করেন, এবং সকলের মনে কবির প্রতি আকৃত্রিম ভ্ৰাতৃভাব জেগে ওঠে- তাতেও কবির বিপদ আছে। ত্রিশ দিন যদি বিজয়াদশমী হয়, এবং ত্রিশকোটি লোক যদি আত্মীয় হয়ে ওঠেন, তা হলে নররূপধারী একাধারে তেত্রিশকোটি দেবতা ছাড়া আর কারো পক্ষে অজস্র কোলাকুলির বেগ ধারণ করা অসম্ভব। ও অবস্থায়
পাতা:বীরবলের হালখাতা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৬৮
অবয়ব