বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুদ্ধের সার্ব্বভৌমিকতা

মস্তকে সকলকে সম্মান দেখাইতাম। অতঃপর আমি মহানগরী মগধে ভিক্ষুসমভিব্যাহারী মহাপুরুষ বুদ্ধদেবের দর্শন পাই। তাঁহার দর্শনমাত্র আমার চিত্ত ভক্তিতে অবনত হইল, আমি মাথার বোঝা ছুঁড়িয়া ফেলিয়া তাঁহার শ্রীপাদপদ্মে আত্মসমর্পণ করিলাম। সেই লোকশ্রেষ্ঠ আমার প্রতি করুণা করিয়া দণ্ডায়মান হইলে, আমি তাঁহার অনুগামী শিষ্য হইবার অধিকার চাহিলাম। করুণাময় প্রভু তৎক্ষণাৎ আমাকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন—আইস সাধু, আমার সহিত আইস।

 বুদ্ধের জীবনকাহিনী পাঠ করিয়া অবগত হওয়া যায় যে, তিনি অসঙ্কোচে পতিতা বারাঙ্গনা আম্রপালীর গৃহে অন্ন গ্রহণ করিয়াছিলেন; তাঁহার এই ব্যবহারের তাৎপর্য্য গ্রহণ করিতে না পারিয়া লিচ্ছবিরাজগণ অসন্তোষ প্রদর্শন করায়ও তিনি বিন্দুমাত্র বিচলিত হন নাই। মহাপুরুষের করুণার শুভ্ররশ্মিসম্পাতে পতিতা নারীর চিত্তশতদল নিমেষমধ্যে প্রস্ফুটিত হইয়াছিল এবং তাহার মনোহর সুগন্ধ সমগ্র বৌদ্ধসমাজকে বিস্মিত করিয়াছিল।

 সকল মানবের বরণীয় এই মহাগুরু অনর্থকর জাতিভেদ, ধনগৌরব, পদগৌরব প্রভৃতি অগ্রাহ্য করিতেন বলিয়াই উচ্চ নীচ, ধনী দরিদ্র, আর্য্য অনার্য্য সকলের চিত্তে তাঁহার বাণী অবাধে প্রবেশ লাভ করিয়াছিল, এবং তাঁহার বাণী সার্ব্বভৌম বলিয়া সর্ব্বপ্রথমে ভারতের পতিত জাতি উহা আনন্দে গ্রহণ করিয়াছিল।

 হাঁ, একথা স্বীকার্য্য যে বুদ্ধদেব ব্রাহ্মণ এবং শ্রমণকে তুল্যরূপে সম্মান দেখাইতে বলিয়াছেন। কিন্তু তিনি ব্রাহ্মণ বলিয়া স্বীকার করেন কাঁহাকে? ধম্মপদে উক্ত হইয়াছেঃ—

৭৩