বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুদ্ধের জীবন ও বাণী

বোধগম্য সরল আখ্যানের দ্বারা দেশপ্রচলিত ভাষায় তাহাদিগকে নির্ব্বাণের অমৃতময়ী বাণী শুনাইয়াছেন। তিনি পতিতকে টানিয়া তুলিলেন, পথভ্রান্তকে পথ দেখাইলেন, অন্ধকারে নিমজ্জিত চক্ষুষ্মান্‌দিগের সম্মুখে করুণার রসধারাপূর্ণ প্রজ্বলিত জ্ঞানের প্রদীপ ধারণ করিলেন।

 বৌদ্ধধর্ম্মের ইতিবৃত্তপাঠে অবগত হওয়া যায় যে, অভ্যুদয়মাত্রেই এই ধর্ম্ম অনার্য্যপ্রধান মগধে অপেক্ষাকৃত অধিকসংখ্যক লোকের মধ্যে প্রচারিত হইয়াছিল; এবং খৃষ্টপূর্ব্ব তৃতীয় শতাব্দীতে যখন এই অনার্য্যপ্রধান মগধের রাজশ্রীর সন্মুখে সমস্ত ভারত মাথা নত করিয়াছিল, তখনই রাজশক্তির পৃষ্ঠপোষণে বৌদ্ধধর্ম্ম সমস্ত ভারতের ধর্ম্মে পরিণত হইয়াছিল।

 মহাপুরুষ বুদ্ধের চিত্ত যদি কোনো কৃত্রিম বাধাকে স্বীকার করিত, তাহা হইলে কিছুতেই এই ধর্ম্ম পতিতকে নবপ্রাণ দান করিতে পারিত না এবং গিরি নদী সমুদ্র প্রভৃতি নৈসর্গিক বাধা লঙ্ঘন করিয়া নানাভাষাভাষী জনগণের বিচিত্র সমাজে প্রতিষ্ঠা লাভ করিত না। বৌদ্ধধর্ম্ম পৃথিবীর একটা প্রধান ধর্ম্মে পরিণত হইয়া ইহার অত্যুচ্চ উদারতারই সাক্ষ্য দান করিয়াছে। বুদ্ধের বাণী এক সময়ে ভারতে অমৃতসেচন করিয়া অত্যাশ্চর্য্য সাহিত্য বিজ্ঞান শিল্প প্রভৃতির সৃষ্টি করিয়াছিল। ভারতের সেই অতীত যুগের সভ্যতাভাণ্ডার হইতে এখনো সর্ব্বদেশের সুধীগণ নব নব রত্ন-আহরণের চেষ্টা করিতেছেন। মহাপুরুষ বুদ্ধ যাহা দান করিয়াছেন, তাহা সার্ব্বভৌম বলিয়া সর্ব্ব পৃথিবী গ্রহণ করিয়াছেন এবং চিরকাল করিবে, ইহা ধ্রুব সত্য।

৭৬