মহামায়ার অকাল মৃত্যুতে সকলেই বিষণ্ণ হইলেন; শুদ্ধোদন নবকুমারের মুখ চাহিয়া কোনরূপে পত্নীশোক সংবরণ করিলেন। শিশু সিদ্ধার্থ বিমাতা ও মাতৃষ্বসা গৌতমীর অঙ্কে দিন দিন বৰ্দ্ধিত হইতে লাগিলেন।
ভোগ ও সম্পদের মধ্যে প্রতিপালিত হইয়াও সিদ্ধার্থ বাল্যকাল হইতেই গম্ভীর ও সংযত ছিলেন। বালসুলভ চাপল্য তাঁহার ছিল না; বিবিধ শাস্ত্র অধ্যয়ন করিয়া তিনি সুপণ্ডিত হইলেন। ক্ষত্রিয়োচিত যুদ্ধবিদ্যাতেও তিনি পারিদর্শিতা লাভ করিয়াছিলেন। শাক্যকুলে অশ্বারোহণ ও রথচালনে কেহই তাঁহার সমকক্ষ ছিল না বলিয়া প্রকাশ। উত্তরকালে যে করুণার দ্বারা তিনি সকল মানব ও প্রাণীকে আপনার করিয়া ফেলিয়াছিলেন, বাল্যে ও কিশোরকালেই তিনি তাহার প্রথম আভাস প্রদান করেন। দলের সঙ্গে মিশিয়া তিনি শিকার করিতে যাইতেন বটে, কিন্তু কখনও কোন প্রাণীর প্রাণসংহার করিতেন না।
এই সময়কার একটি প্রসিদ্ধ আখ্যায়িকা সিদ্ধার্থের জীবপ্রীতির প্রকৃষ্ট পরিচয় প্রদান করে। কথিত আছে, একদা নির্ম্মল বসন্তপ্রভাতে তিনি রাজবাটীর উদ্যানে ভ্রমণ করিতেছিলেন, এমন সময়ে একঝাঁক কলহংস মধুর কলরবে আকাশ মুখরিত করিয়া তাঁহার মাথার উপর দিয়া উড়িয়া যাইতেছিল। সহসা তীরবিদ্ধ হইয়া একটি হংস সিদ্ধার্থের সম্মুখে ভুতলে পতিত হইল। হংসটির শুভ্র বক্ষঃস্থল রক্তে রঞ্জিত হইয়া গিয়াছিল। সিদ্ধার্থ ক্ষণবিলম্ব না করিয়া আহত হংসটিকে কোলে লইয়া তীরটি তুলিয়া ফেলিলেন এবং স্নেহশীতল হস্তে তাহার সেবা করিতে লাগিলেন। পক্ষীটি