কলেবরে কি কঠোর সংগ্রাম করিতেছে! ক্লিষ্ট বলীবর্দ্দদের সুকোমল অঙ্গে মূহুর্ম্মুহুঃ কি নির্ম্মম আঘাত পড়িতেছে! ইহাদের পদতলে পড়িয়া কত অসংখ্য ছোট ছোট প্রাণী নিহত হইতেছে! এই সকল মৃতদেহ লইয়া পক্ষীদের মধ্যে কি ভীষণ কড়াকড়ি পড়িয়া গিয়াছে!
সিদ্ধার্থের করুণ আঁখি ধীরে ধীরে নিমীলিত হইয়া আসিল। অসংখ্য নরনারী জীবজন্তুর দুঃখ তাঁহার সুকুমার চিত্ত স্পর্শ করিল। জন্ম মৃত্যুর জ্ঞেয় রহস্য তাঁহার চিন্তার বিষয় হইল। জম্বুবৃক্ষতলে চিত্রার্পিতের ন্যায় তিনি ধ্যানস্থ হইয়া রহিলেন।
উৎবসান্তে গৃহে ফিরিবার সময়ে কুমারের খোঁজ পড়িল। কিয়ৎকাল অনুসন্ধানের পরে পৌরজনেরা দেখিল তিনি নিম্পন্দদেহে নিমীলিতনেত্রে জম্বুতরুতলে ধ্যানমগ্ন হইয়া আছেন। বিশ্বপ্লাবনী করুণায় উদ্ভাসিত কুমারের দিব্য মুখকান্তি দেখিয়া শুদ্ধোদনের বিস্ময়ের সীমা রহিল না। বহুক্ষণ পরে ধ্যান ভাঙ্গিলে পিতাকে প্রণাম করিয়া তিনি করুণকণ্ঠে কহিলেন—“পিতঃ, কৃষিকার্য্যে অসংখ্য জীবের প্রাণবিনাশ হয়, এই কার্য্য হইতে আপনি বিরত হউন।”
পুত্রের গাম্ভীর্য্য ও বৈরাগ্য বিষয়াসক্ত পিতাকে চিন্তিত করিয়া তুলিল। সিদ্ধার্থের মন ভোগসুখের প্রতি আকৃষ্ট করিবার জন্য পিতা তাঁহাকে বিবাহপাশে বন্ধন করিবার ইচ্ছা করিলেন। দণ্ডপাণি-দুহিতা গোপার সহিত কুমারের বিবাহ হইল। তাঁহার উদাসীন চিত্তকে ভোগাসক্তির দিকে লইয়া যাইবার জন্য শুদ্ধোদন প্রত্যহ নৃত্য গীত আমোদ-প্রমোদের বিবিধ ব্যবস্থা করিলেন।
রূপবতী ও গুণবতী গোপাকে জীবনসঙ্গিনীরূপে লাভ করিয়া