বুদ্ধের জীবন ও বাণী
ভিক্ষা করিয়া তাঁহাকে তণ্ডুল সংগ্রহ করিতে হইত—নিজের হাতে তাঁহাকে আপনার আহার্য্য প্রস্তুত করিতে হইত। মনকে দৃঢ় করিয়া তিনি আজন্মের বিলাস বিসর্জ্জন করিলেন।
উদরান্নসংগ্রহের জন্য সিদ্ধার্থকে নগরে ভ্রমণ করিতে হইত। তাঁহার রমণীয় শান্তোজ্জ্বল মূর্ত্তি নগরবাসীদিগকে বিস্মিত করিয়াছিল—তাঁহার মুখকান্তি দেখিয়া সকলে ভক্তিতে বিহ্বল হইত। ভৃত্যদের মুখে এই অপূর্ব্ব তরুণ সাধুর খ্যাতি শুনিয়া মগধরাজ বিম্বিসার সিদ্ধার্থের সহিত দেখা করেন। তাঁহার পরিচয় পাইয়া রাজা আশ্চর্য্যান্বিত হইলেন এবং তাঁহাকে কঠোর সন্ন্যাসব্রত ত্যাগ করিয়া সংসারধর্ম্ম-গ্রহণের জন্য সনির্ব্বন্ধ অনুরোধ করিলেন। বলা বাহুল্য, সিদ্ধার্থের মন আর ভোগবিলাসের দিকে ফিরিল না।
সিদ্ধার্থ লোকমুখে শুনিতে পাইলেন, বৈশালীতে আকাড়কালাম নামক জনৈক শাস্ত্রজ্ঞ সুপণ্ডিত ঋষি হিরণ্যবতী নদী তীরে বাস করেন। এই ঋষির তিন শত শিষ্য আছে। সিদ্ধার্থ ইহার শিষ্যত্ব স্বীকার করিলেন। এখানে তিনি কিছুকাল চর্চ্চা করেন। অত্যুগ্র প্রতিভাবলে অল্পদিনের মধ্যেই তিনি গুরুর জ্ঞাত সর্ব্ববিদ্যা আয়ত্ত করিলেন কিন্তু যে মুক্তিলোকের সন্ধানে তিনি যৌবনে গৃহত্যাগ করিয়া ভিখারী হইয়াছেন, তাহারা কোনো খোঁজই পাইলেন না।
অতঃপর এক শৈলগুহায় রামপুত্র রুদ্রকের সহিত তাঁহার দেখা হয়। এই সুপণ্ডিত শাস্ত্রজ্ঞ ঋষি সাত শত শিষ্যকে শাস্ত্রাভ্যাস করাইতেন। শিষ্যত্ব স্বীকার করিয়া সিদ্ধার্থ কিছুকাল ইহার নিকটে শাস্ত্র পাঠ করেন। অল্পকাল-মধ্যেই তিনি গুরুর সমকক্ষতা লাভ করিলেন। রুদ্রক এই প্রতিভাশালী শিষ্যকে তাঁহার আশ্রমে রাখিয়া