বিপুল বলিষ্ঠ দেহ ভাঙ্গিয়া দিয়াছে, মৃত্যুর পূর্ব্বলক্ষণসমূহ তাঁহার দেহে প্রকাশ পাইল। প্রবীণ শিষ্যদের অনেকেই এখন জীবনমৃত্যুর সন্ধিস্থলে উপস্থিত। এই বৎসর তাঁহার অনুগত প্রধান শিষ্য সারীপুত্র ও মৌদ্গল্যায়ন মৃত্যুমুখে পতিত হইলেন। ইহাদের মৃত্যুতে সংঘ বলহীন হইয়া পড়িল। সংঘের প্রাচীন নবীন সকল ভিক্ষু নবীন উদ্যমে আপনাদের সাধনার দ্বারা সংঘকে বলশালী করিবার নিমিত্ত বদ্ধপরিকর হইলেন। এই বৎসর বুদ্ধ একবার সাংঘাতিক রোগে আক্রান্ত হইলেন। কিন্তু শয্যাশায়ী হইয়াও অনন্যসুলভ মানসিক বল দ্বারা তিনি রোগযন্ত্রণা অতিক্রম করিয়া অবিচলিত থাকিতেন। এই সময়ে তিনি বৈশালীর এক বিহারে বাস করিতেছিলেন। আরোগ্যলাভের পরে আনন্দ একদিন তাঁহাকে নির্জ্জনে কহিলেন—“ব্যাধি আপনার দেহের অপূর্ব্বকান্তি হরণ করিয়াছে, আপনার সেই রোগের কথা মনে পড়িলে আমি এখনও চারিদিকে অন্ধকার দেখিয়া থাকি। তবে আমার মনে এই দৃঢ় ধারণা রহিয়াছে যে, সংঘরক্ষার উপায় না বলিয়া কদাচ আপনি মানবলীলা সংবরণ করিবেন না।”
বুদ্ধ কহিলেন—“আনন্দ; সংঘ আমার কাছে আর কি প্রত্যাশা করিয়া থাকেন? আমি অকপটভাবে সকলের কাছে আমার উপলব্ধ সত্য ব্যাখ্যা করিয়াছি, কোনো কথাই ত গোপন করি নাই। আমি কখনো একথা মনে করি না যে আমি এই সংঘের চালক অথবা এই সংঘ আমার অধীন। যদি কেহ এমন কথা মনে করেন, তিনি নেতার আসনগ্রহণ করিয়া সংঘকে দৃঢ়রূপে বাঁধিবার নিয়মপ্রণালী প্রণয়ন করুন। সংঘরক্ষার জন্য আমি