কোনো বাঁধা নিয়মপ্রণালী রাখিয়া যাইতে ইচ্ছা করি না। আনন্দ, আমি অশীতিবৎসরের বৃদ্ধ, যাত্রার শেষ অবস্থায় উপস্থিত হইয়াছি; আমার শরীর এখন ভগ্ন শকটের তুল্য হইয়াছে, জোড়াতাড়া দিয়া বিশেষ সতর্কতার সহিত ইহাকে চালাইতে হইতেছে। আমার মন যখন বাহ্যবিষয় হইতে প্রত্যাবৃত্ত হইয়া গভীর ধ্যানের মধ্যে অবস্থান করে কেবলমাত্র তখনই আমার শরীর সুস্থ থাকে।”
“আনন্দ, আপনারাই আপনাদের নির্ভরের স্থল হও, অন্য কাহারও সাহায্যের প্রত্যাশা করিও না। আপনারাই আপনাদের প্রদীপ হও। ধর্ম্মই প্রদীপ, সেই প্রদীপ দৃঢ়হস্তে ধারণ কর, সত্যকে সহায় করিয়া নির্ব্বাণের সন্ধানে প্রবৃত্ত হও।”
“আনন্দ, আপনি আপনার প্রদীপ ও নির্ভরস্থল হওয়া অসম্ভব বলিয়া মনে করিও না। সংঘের ভিক্ষুগণ যদি ধর্ম্ম সাধনা দ্বারা আপনাদের অন্তরের নিগূঢ়প্রদেশে বাস করিতে পারেন, তাহা হইলেই তাঁহার দৈহিক ক্লেশ, প্রবৃত্তির তাড়না এবং তৃষ্ণাসম্ভূত সর্ব্ববিধ দুঃখ অতিক্রম করিতে পারিবেন।”
“আনন্দ, আমার মৃত্যু ঘটিলে সংঘের অনিষ্ট হইবে কেন? যাঁহাদের চিত্ত বোধিলাভের জন্য কৌতূহলী, যাঁহারা বাহিরের কোনো-প্রকার সহায়তার প্রত্যাশা না করিয়া অবিচলিত অধ্যবসায়ের সহিত সত্যসাধনা দ্বার নির্ব্বাণলাভের চেষ্টা করিবেন, তাঁহারা নিঃসন্দেহ চরম শ্রেয়ঃ লাভ করিবেন।”
বুদ্ধদেবের পরিনির্ব্বাণলাভের দিন সমীপবর্ত্তী হইয়া আসিল। মৃত্যুকে আলিঙ্গন করিবার জন্য তিনি প্রস্তুত হইয়া আছেন। একদিন তিনি প্রসঙ্গক্রমে আনন্দকে কহিলেন—“আনন্দ! আমার