পাতা:বৃহৎ বঙ্গ - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা 密 YMO প্ৰকাশিত হইয়াছে, তাহা চৈতন্য-লীলায় প্রকাশ পাইয়াছে- সে লীলার আভ্যন্ত স্বপ্ন ও স্বর্গের সুষমাময়। এখনও খোল বাজিয়া উঠিলে ইহসংসার ও অধ্যাত্মলোকের মধ্যে যে ব্যবচ্ছেদ-রেখা বাঙ্গালী তাহা ভুলিয়া যায়। আশ্চৰ্য্যের বিষয় এই ভাব-প্রবণতা-ৰাহা বাঙ্গালী জাতিকে সর্বশ্রেষ্ঠ অধ্যাত্ম-সম্পদের অধিকারী করিয়াছে—তাহা নীরস ও শুষ্ক জড়বাদীরা নিন্দা করিয়া থাকেন। যুগে যুগে আদর্শ ভিন্ন হয় ; এক যুগে যাহা সৰ্ব্বজন-প্ৰশংসিত, অন্য যুগে তাহার গুণাগুণ-সম্বন্ধে প্রশ্ন উঠে, এমন কি তাহা নিন্দিত হয়। সুতরাং আদর্শের বিচার নিম্প্রয়োজন। কিন্তু যে যুগেই বাঙ্গালী যে আদর্শের পশ্চাৎ ধাবিত হইয়াছে, সে তাহার পিছনে এতদূৱ চলিতে পারিয়াছে যে তাহা অপর জাতির বিস্ময়ের বস্তু হইয়া দাড়াইয়াছে। প্ৰত্যেক ক্ষুদ্র বিষয়ে বাঙ্গালী অসীমকে লক্ষ্য করিয়াছে। সেই অসীম মহান হইতেও মহান এবং অণু হইতেও অণু-“মহতোহপি মহীয়ান অশোরপি অণীয়ান” বাঙ্গালীর গল্পসাহিত্যের পুনরায় উল্লেখ কৰিব। গল্পগুলি নিছক কল্পনা ও মিথ্যা হইলেও ইহারা জাতীয় চরিত্রের দিগদর্শন। রাজগৃহে “রমণীবিলাসী”র পরীক্ষা,-সে। পরমসুন্দরী যোড়শী রমণীর সঙ্গে * 지 পরদিন জানাইল, ছাগের গন্ধে সে রাত্ৰিতে ঘুমাইতে পারে নাই ; অনুসন্ধানে জানা গেল, আপোগণ্ড অবস্থায় সেই রমণী কয়েক মাস ছাগ-দুগ্ধ খাইয়াছিল। উৎকৃষ্ট দুগ্ধফেননিত বহুমূল্য শয্যায় গুইয়া “শষ্য+বিলাসী” অভিযোগ করিল, চুলের জন্য রাত্রে তাহার ঘুমে বিঘ্ন ঘটিয়াছে- জানা গেল, সপ্তাতল গদীর শেষটির নীচে একগাছি চুল ছিল। রাজার অতিথিশালায় অলসদের পরীক্ষা । তিনি অলসদিগকে ভরণ-পোষণ করিবেন-এই ঘোষণা করিয়াছিলেন। শত শত অলস ব্যক্তি আসিয়া অতিথিশালা ভৰ্ত্তি করিয়া ফেলিল। পরীক্ষার দিনে মধ্যরাত্রে রাজা গৃহে আগুন ধরাইয়া দিলেন, অতিথিরা যে যে পথ পাইল-পালাইয়া গেল, মাত্র রহিল তিন জন। এই তিন জন প্ৰকৃত অমলসন ব্যক্তি প্ৰজ্বলিত অগ্নিতে পুড়িয়া । মরিতে উস্তুত হইল, তবু নিজেকে বঁাচাইবার চেষ্টা মাত্র করিল না। একজন আগুন দেখিয়া । বলিয়া উঠিল “কত রবি জ্বলে ?” দ্বিতীয় ব্যক্তি আরও অলস, সে বলিল ‘কে বা আঁখি মেলে ?” চোখ চাওয়াও তাহার নিকট শ্রম-সাধ্য ; তৃতীয় ব্যক্তি বাক্যব্যয় করিতেও প্ৰস্তুত নহেসে অতি সংক্ষেপে বলিল ‘ফি শো’ ( ফিরিয়া শোও)। এই সকল তুচ্ছ গল্পের দ্বারা বুঝা যায়, বুদ্ধি ও অনুভূতিকে সুন্মাতিসূক্ষ্ম ও অতি প্রখর করিবার যে তপতা, তাহাতে ৰাঙ্গালী সিদ্ধিলাভ করিয়াছিল। এই সকল আজগুবী গল্পের বহুল প্রচার দ্বারা মনে হয়, বাঙ্গালী সর্বদা একটা অসম্ভব আদর্শ চোখের সামনে রাখিয়াছে। বাঙ্গালী যাহা করিবে, তাহার চূড়ান্ত করিয়া ছাড়িবে। সাহিত্যািরখ স্বগীয় চন্দ্রনাথ বসু মহাশয় জাতীয় চরিত্ৰ বুৰাইবার জন্য র্তাহার একখানি পুস্তকে এইরূপ দুই একটি গল্পের উল্লেখ করিয়াছিলেন। ‘কৃপণ” নামক প্রাচীন যুগের একটি গল্পে শুধু দুইটি পয়সী বীচাইবার জন্য একজন কৃপণ ধনী কি অসাধ্য সাধন করিয়াছিল, তাহা লিখিত আছে।

  • বশেষে সেই উদ্দেশ্য-সিদ্ধির জন্য সে চিতায় খাইয়া নৃত্মবৎ পড়িয়া বহিল। যখন চিতায় ।

하 - | 3f) 1