পাতা:বেণী রায় (সংখ্যা ১) - সত্যরঞ্জন রায়.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেণী রায়। আমায় চেনে না । বলে, আমি পাগল, পত্নীহারা হইয়া আমার মস্তিকবিকৃতি ঘটিয়াছে। ভূম্যধিকারিগণ নৃত্যবিলাসে ও প্রজাপীড়নে রত, পণ্ডিতেরা ব্যাকরণ ও স্মৃতির চর্চায় পটু, চণ্ডীর মন্ত্র ভুলিয়া ‘আবৃত্তি’মাত্রে গর্বিত। দেশের এই দুৰ্দশার দিনে স্বাৰ্থন্ধ বিমূঢ়াত্মা ভূস্বামীদিগকে একদিন নৃত্যোল্লিাস হইতে বিরত হইতে বলিলাম। তাহার হাসিয়া উঠিল। দেশটা যেন তাহদের নিকট সম্পূর্ণ নিরর্থক শব্দমাত্ৰ মনে হইল। ব্ৰাহ্মণপণ্ডিতগণকে কহিলাম, “তোমরা চণ্ডীর মানে বুঝি না, অথচ তোমরাই পারমার্থিক গুরু। কেবল সাপের মন্ত্র পড়িয়া সময় নষ্ট করিতেছ!” তাহারা। “বদ্ধপাগল’ বলিয়া আমাকে দূর করিয়া দিল। ফিরিবার সময় দেখি, কয়েকজন ভিখারী খঞ্জনি বাজাইয়া গায়িতেছে,- (ও ভাই ) একা এসে একা যেতে যে হবে, সাথের সাখী কেউ না ভাবে ! ( হায় রে )-- শুনিয়া আমার মাথা ঘুরিয়া গেল। সহসা মনে হইল, এইরূপ এক একটি গ্ৰাম্য গীতে, এক একটি গ্ৰাম্য কথায় বাঙ্গালার কি সৰ্ব্বনাশ হইতেছে। উহা লোকের মৰ্ম্মে মৰ্ম্মে প্ৰবেশ করিয়া আৰ্যরক্ত দূষিত করিতেছে। আমি ভিখারীদের বলিলাম, “এ গান তোমরা আর গাহিও না।” তাহারা অবাক হইয়া বলিল, *কেন, ইহাই তো আমরা পুরুষানুক্ৰমে গাহিয়া আসিতেছি। ইহা গাহিয়াই দুয়ারে দুয়ারে দু’মুঠ ভিক্ষা পাই। ঠাকুরের মাথা খারাপ হইয়াছে কি ?” আমি তাহদের মারিতে গেলাম। বলিলাম, “তোদের এ সব গান আর গায়িতে দিব না। পালা, পাল,— O8