পাতা:বেণী রায় (সংখ্যা ১) - সত্যরঞ্জন রায়.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম পরিচ্ছেদ । আজও আকাশ পরিষ্কার হয় নাই। বেণী উদভ্ৰান্তভাবে ঘুরিয়া বেড়াইতেছেন। তাহার মাথার উপর ঝড় বৃষ্টি বহিয়া যাইতেছে, ঝঞ্চ উন্মাদের মত ছুটয়া আসিতেছে, কোনদিকে দৃকপাত নাই। তাহার মাথার উপর প্রভাতের কনক রৌদ্র, মধ্যাক্কের তীক্ষোজ্জল কর, সায়াহ্রের স্নানরশ্মি পৰ্য্যায়ক্রমে বৰ্ষিত হইতেছে, ভ্ৰক্ষেপ নাই। তাহার মুখমণ্ডল কখনও হাস্তন্নিগ্ধ, কখনও অশ্রুতি, কখনও আশাপ্ৰদীপ্ত, কখনও নিরাশান্দিগ্ধ, কখনও কঠোর, কখনও কাতর। ধূ ধু প্রান্তর, সেখানে জনসমাগমমাত্র নাই। মধ্যে মধ্যে দিগন্ত উদ্ভাসিত করিয়া এক একবার বিদ্যুৎফুরণ হইতেছে। রুক্ষকেশ, উদভ্ৰান্তদৃষ্টি বেণীমাধবকে সেই আলোকে বোধ হইতেছে যেন একটা বিশালসত্তা মেঘস্পর্শী কেশ লইয়া বিরাটরূপে দণ্ডায়মান, অনন্তগ্রাসী অন্ধকারে যেন একটা তেজোবহি ধ্বক ধ্বক করিয়া জ্বলিয়া উঠিতেছে! আকাশে মেঘ ডাকিতেছে-দুরু দুরু গুরু গুরু, নিম্নে বেণী মাকে ডাকিতেছেন, “কালী, কারালী, অম্বিকে, সর্বমঙ্গলমঙ্গল্যে শিবে সৰ্বার্থসাধিকে ৷” বেণী উন্মত্তের ন্যায় সেই প্ৰান্তরে ছুটিয়া বেড়াইতেছেন। আপন আপনি বলিতেছেন, “কই আলো ?--নিভে গেল, নিভে গেল। আলো আমার শ্ৰেয়ঃ, আলো আমার প্ৰেয়, আলো আমার ক্ষুধার অন্ন, তৃষ্ণার জল। কষ্ট আলো ?-মা, মা, একটু আলো,