পাতা:বেণী রায় (সংখ্যা ১) - সত্যরঞ্জন রায়.pdf/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ । অন্ধকারময়ী রাত্রি। সারি সারি স্নাপিত বাধ্যমান ব্যক্তিগণ যুপকাষ্ঠের সম্মুখে রজ্জ্ববিদ্ধ। তাহদের ঘন ঘন শরীর কম্প ও হৃদিকম্প হইতেছে। ভীত চকিত দৃষ্টিতে তাহার হাড়িকাঠের দিকে চুহিয়া আছে। তান্ত্রিক পুরোহিত আসব পান করিয়া রক্তলোচনে উৎসর্গের মন্ত্র পড়িতেছেন। সকলেই উন্মত্ত। পুরোহিত বলিলেন, “সময় উত্তীর্ণ হয়, বলি দাও।” ঢাকীরা ঢাকের কাঠি ঘুরাইতে লাগিল ; কিন্তু বলির বাজানার শব্দ বাহির হইল না। তাহদেরও মত্তাবস্থা। চণ্ডী বলিলেন, “যুগলদা, সবার আগে ঐ বড় দাড়ীওয়ালা দরবেশটিাকে বলি দেওয়া যাক। তার পর তার চেয়ে ছোট দাড়ী, আরো ছোট দাড়ী, এমনি করিয়া বাছিয়া বাছিয়া পর পর বলি দিব। কি বল ?” যুগলের সম্মতি পাইয়া চণ্ডী দরবেশকে ধরিয়া তাহার গলদেশ হাড়িকাঠের ভিতর চালাইয়া দিলেন। তান্ত্রিক পুরোহিত ভাবাবেশে বলিতে লাগিলেন, “মা, মা যবনমন্দিনি।” দরবেশ অট্টহাস্ত করিয়া গায়িতে লাগিলেন, “নিবিড় আঁধারে মা, চমকে ও রূপরাশি !” চণ্ডী ঘাতকের বেশে খড়গ উত্তোলন করিয়া তাহাকে বলি দিতে উদ্যত। মনুষ্যছাগগুলির সমস্বরে ধবনিত করুণ আৰ্ত্তনাদে দিল্মণ্ডল কম্পিত । এমন সময়ে বেণী রায় হুঙ্কার দিয়া “থাম।।” “থাম!” বলিতে বলিতে সেখানে ছুটিয়া আসিলেন। দরবেশ তখনও গায়িতেছিলেন, “নিবিড় আঁধারে মা, চমকে ও রূপরাশি ।”