পাতা:বেণের মেয়ে - হরপ্রসাদ শাস্ত্রী.pdf/১৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেণের মেয়ে লইয়াই রছিলেন। সাতগা ও মহাবিহারের সম্মুখে গঙ্গা খুব চওড়া, একটা সমুদ্রের খাড়ীর মত, মাঝে মাঝে বালির চড়া। দু’একটা চড়ায় মাটি আছে, আর তার উপর নিবিড় জঙ্গল —আসসেওড়া, পাটপটী, বন-ঝাউ, নানা রকমের লতা, কাটাগাছ, কাটানটে, কন্টিকারি, কালকাসন্দা, চাক চাকন্দি, শ্যালকাটা, ফেনী-মনসা, গোয়ালে-লতা। এই সবের মধ্যে পা বাড়ান যায় না। আবার ওপারে দূরে সুন্দরবন—সুন্দরী গাছ, বেত গাছ, গোলপাতার গাছ, সঙ্গে সঙ্গে নোনা, ভাটুই, গম্ভীরা, জীবন, জিউলী সেও খুব ঘন, তার নীচে ও আবার ঘন বন । মহারাজাধিরাজের ভাবি আমোদ --বালির চড়ায় কুকুর ছাড়িয়া দেন, তাহারা খরগোস, শজারু, গোসাপ, গন্ধগোকুলা ধরিয়া লইয়া আসে। খরগোস ও ছোটে, পিছু পিছু কুকুরও ছোটে—দেখিতে দেখিতে আর দেখা যায় না। আবার দু’মিনিট পরে কুকুরটা খরগোসটিকে দাতে ধরিয়া মতারাজাধিরাজকে পুরস্কার দেয় । মহারাজাধিরাজ কুকুরের গায়ে হাত দিয়া তাহাকে আদর করিলেন, সে আবার আর একটা কি দেখিয়া ছুটিল। তাঙ্গার আদর দেখিয়া আৰু পাচটা কুকুর ও আপনি আপনি বাহাদুরী দেখাইবার জন্য ছুটিল। একবার পােচ সাতটা কুকুরে একটা নেকড়ে বাঘকে তাড়া করিয়াছে, সে চারিদিকে ছুটিতেছে। কোথাও পরিত্ৰাণ নাই দেখিয়া, যেদিকে রাজা ছিলেন, সে সেই দিকে ছুটিল। রাজা ও শীকারীরা তীর, ধনুক, বর্শা, বল্লম লইয় স্তুত হইলেন ; কিন্তু দূর হইতেই মহারাজাধিরাজের এক তীরেই তাহার জীবন শেষ হইয়া গেল । সন্ধ্যার পূৰ্ব্বে গঙ্গার উপর দিয়া নানা রকমের পাখী ঝাঁক বাধিয় বেড়ায় ; কত রকম শব্দ করে, গান করে, খেলা করে ; আকাশ যেন ছাইয়া ফেলে। মহারাজাধিরাজ এক এক দিন ঐ সকল পাখী লক্ষ্য করিয় পোষা বাজ ছাড়িয়া দিতেন। তাহারা ছত্রভঙ্গ হইয়া প্রাণভয়ে পলাইত, SNOO