পাতা:বৈকুন্ঠের উইল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈকুণ্ঠের উইল ܐ কানে যাওয়ায় তিনি হিসাবের খাতা হইতে মুখ তুলিয়া একেবারে কান-খাড়া করিয়া রহিলেন। ভবানী মৃদু হাসিয়া কহিলেন, এ বছর খুব মন দিয়ে পড়লে আসচে বছর ও-ও ফাষ্ট হতে পারবে । বিমাতার এই স্নেহের কণ্ঠস্বর বাড়িয্যেমশাই চিনিতে পারিলেন না। সপত্নীপুত্রের প্রতি স্ত্রীলোকের বিদ্বেষ তাহার কাছে এমনি স্বতঃসিদ্ধ সত্য যে কোথাও কোন ক্ষেত্রেই যে ইহার ব্যতিক্রম ঘটিতে পারে, সে কথাও তঁহার মনে উদয় হইল। না । ইহাকে একটা মৌখিক শিষ্টতামাত্র জ্ঞান করিয়া তিনি গোকলোকে আরও তুচ্ছ করিয়া দেখাইবার অভিপ্ৰায়ে জিহবার দ্বারা তালুতে একপ্রকার শব্দ উৎপাদন করিয়া বলিলেন, হায় হায়! গোকুলো হবে। ফাষ্ট্য। পূবের স্মৃয্যি উঠবে পশ্চিমে। যে ফাষ্ট হবে মা সে ঐ তোমার বঁা দিকে শুনচে। বলিয়া তিনি অঙ্গুলিসঙ্কেতে বিনোদকে নির্দেশ করিয়া হঠাৎ একটুখানি কাষ্ঠ হাসির রসান দিয়া বলিলেন, তাই কি ছোড়ার লজাসরাম আছে। উল্টে ছেলেদের সঙ্গে কেঁদেল করছিল যে “আমি পাশ হই নি বটে, কিন্তু আমার ছোটভাই যে সকলের প্রথম হ’য়েচে । তোদের কটা ভাই এমন ডবল প্রমোশন পেয়েচে বল ত রে!” শোন একবার কথা মা ! ছোটভাই ফাষ্ট হ’য়েচে-কোথায় ও লজ্জায় মরে যাবে, না, ওর দেমাক দেখা ! ভবানী আর থাকিতে পারিলেন না, জোর করিয়া গোকুলকে টানিয়া লইয়া তাহার মাথাটা বুকের উপর চাপিয়া ধরিলেন গোকুল লজ্জায় মরিয়া গিয়া মায়ের বুকে মুখ” বুকাইয়া চুপ