পাতা:বৈজ্ঞানিক হিন্দুধর্ম্ম প্রথম ভাগ.djvu/২০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ১৯১ ] প্রাচ্য জগতে ধৰ্ম্মশাস্ত্রই পাপপুণ্যৰিচারের কেন্দ্রস্থল। যাহা শাস্ত্র সম্মত, তাছাই পুণ্যকৰ্ম্ম, আর যাহা শাস্ত্রবিরুদ্ধ তাছাই পাপকৰ্ম্ম। এ জন্ত হিন্দুশাস্ত্রানুসারে এক জন ধৰ্ম্মাত্মা হিন্দুর নিকট গঙ্গাস্নান মহাপুণ্য ও গোস্থত্যা মহাপাতক এবং কোরাণমতে একজন মুসলমানের নিকট কাফরকে তরবারি বলে স্বধৰ্ম্ম দীক্ষিত কর। মহাপুণ্য ও শূকরমাংসম্পর্শ মহাপাপ । ইছার মতে পাপপুণ্য বিচার করিবার ক্ষমতা তোমার নাই । ধৰ্ম্মশাস্ত্র ধৰ্ম্মাধৰ্ম্ম বিষরে যেরূপ নির্দেশ করে, তোমায় তাহ অন্ধবিশ্বাসের সহিত পালন করিতে হয় এবং তুমিও কদাচ তাহ হইতে একচুলও স্থলিত হইতে পার না । সুশিক্ষিতাশিক্ষিত সমাজস্থ যাবতীয় লোককে একমার্গে চালিত করিয়া সমাজের প্রকৃত সুখবৰ্দ্ধন করাই ধৰ্ম্মশাস্ত্রের মহৎ উদেণ্ড । সমাজে স্বেচ্ছাচারিতা ও উচ্ছৃঙ্খলতা নিবারণ করিবার জন্ত ধৰ্ম্মশাস্ত্র এস্থলে সমাজস্থ যাবতীয় লোকের বিবেককে এক পথের পথিক করিয়া দেয় । , পাশ্চাত্য জগতে হৃদমাভ্যন্তরস্থ বিবেকই পাপপুণ্যবিচারে আমাদের প্রধান সহায় । যাহা বিবেকানুমোদিত, তাহাই পুণ্য কৰ্ম্ম বা ধৰ্ম্ম, আর বাহ বিবেকবিরুদ্ধ, তাহ পাপকৰ্ম্ম বা অধৰ্ম্ম । খ্ৰীষ্ট ধৰ্ম্মমতে এ সংসার কেবল পরীক্ষাক্ষেত্ৰ ; সুতরাং এ ধৰ্ম্ম. মানবের স্বভাবসিদ্ধ স্বাধীন ইচ্ছা ও বিবেকেয় প্রাধান্ত স্বীকার করে। ইহার মতে বিবেক তোমায় যে পথে লইয়া যায়, তুমি কেৰল সেই পথে যাইতে বাধ্য। যদি সে পথ শাস্ত্রবিরুদ্ধ হয়, শাস্ত্রকে অমান্ত করিয়াও বিবেকের আদেশ শিরোধীর্ষ্য করা উচিত । দেখ, শাস্ত্র মানবরচিত, অতএৰ ভ্ৰমসফুল ; কিন্তু বিবেক অভ্রাস্ত ও সাক্ষাৎ সম্বন্ধে এ জগতে ঈশ্বরের প্রতিনিধি স্বরূপ ; আমরা সহজাত সংস্কার বলে বা সহজ জ্ঞানে স্বগীয় বিবেক প্রাপ্ত হই । ইহার আদেশ ও ঈশ্বরের আদেশ, উহাদের মধ্যে কিছুমাত্র প্রভেদ নাই ; অতএব ইহারই আদেশ সৰ্ব্বতোভাবে পালনীয়। আরও দেখ, ইহার অভিমতে কৰ্ম্ম করিলে, হৃদয়ে আত্মপ্রসাদরূপ স্বর্গমুখ ভোগ করা যায়। মার ইছার অনভিমতে কৰ্ম্ম করিলে, হৃদয়ে আ ক্সপ্লাfনরূপ নরকযন্ত্রণ ভোগ করিতে হয় । অতএধ খ্ৰীষ্টধৰ্ম্মমতে পাপপুণ্যবিচারে বৰেকেরই প্রাধান্ত স্বীকার কর। কৰ্ত্তব্য । সুশিক্ষিত নব্যসম্প্রদায় আজ বেকের যতদুর পক্ষপাতী, তাছারা ধৰ্ম্মশাস্ত্রের ততদুর পক্ষপাতী নন।