পাতা:বৌদ্ধধর্ম - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

e বৌদ্ধধৰ্ম্ম । পৃথিবী হইতে অন্তৰ্দ্ধান করিলেন, তাহার কিয়াৎপরে ভারতবর্ষের এক সীমা হইতে সীমান্তর। পৰ্য্যন্ত শত স্থান শত দেবদেবীর প্ৰস্তর মূৰ্ত্তিতে পরিকীর্ণ হইয়া উঠিল, তার সাক্ষী ইলোরা, অজন্তু, খণ্ডগিরি, শ্ৰীক্ষেত্র ; বুদ্ধগয়ায় তারাদেবী ও বাগীশ্বরী দেবী, বৈশালীতে, ধ্যানী বুদ্ধ অমিতাভ ও বোধিসত্ত্ব অবলোকিতেশ্বর, নালন্দ বিহারে অবলোকিতেশ্বর, তারা, ত্ৰিশিরা, বজবরাহী, বাগীশ্বরী ইত্যাদি অনেকানেক বৌদ্ধ দেবদেবীর প্ৰতিমূৰ্ত্তি ও মন্দির অনেক স্থানে অদ্যাপি দেখিতে পাওয়া যায়। দেবপ্ৰসাদ হইতে বিচ্ছিন্ন আত্মপ্ৰভাবের নিরতিশয় কঠোর সাধনার যে বিসদৃশ পরিণাম, তাহা আর একদিক দিয়া প্ৰতীয়মান হইতেছে। আমরা দেখিতে পাই যে, ধৰ্ম্মসাধন ক্ৰমে উচ্ছঙ্খল হইয়া যথেচ্ছাচারিতায় পরিণত হইল। যথেচ্ছচারিতার বলে কৃত্ৰিম সিদ্ধি উপাৰ্জনের প্রণালীই তন্ত্রশাস্ত্ৰ-- কালক্রমে বৌদ্ধধৰ্ম্মের গভীর ভিতরে বিকট বীভৎস তান্ত্রিক ক্রিয়াকাণ্ড প্ৰবেশ লাভ করিল। “হিন্দু মতানুযায়ী সিদ্ধ যোগীরা যেমন অণিমা, লঘিমা, ব্যাপ্তি প্ৰভৃতি আট প্রকার ঐশ্বৰ্য্য লাভ করেন। লিখিত আছে, সেইরূপ বৌদ্ধদিগেরও বিশ্বাস এই যে, ঐ সম্প্রদায়ী সিদ্ধব্যক্তিরা অশেষরূপ অলৌকিক শক্তি প্ৰাপ্ত, গুইয়া অতীব অদ্ভুত কাৰ্য্যসমুদয় সম্পাদনা করিতে সমর্থ হন,-যেমন বায়ু মধ্যে সঞ্চারণ, জলের উপর গমনাগমন, গৃহসম্বলিত পৰ্বত ও সমুদ্র প্রকম্পন, পর্বত ও পৃথিবীর গৰ্বদর্শন, ইচ্ছাবলে বায়ুপ্রবাহ উৎপাদন, অগ্নিধারা আনয়ন, নষ্ট বা গুপ্ত সম্পত্তি উদগার করণ, ইত্যাদি।”