পাতা:ব্যথার দান – কাজী নজরুল ইসলাম.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ব্যথার দান

অভিমানী স্নেহ-বঞ্চিতের মত আমার ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না আসবে না। সে দিন হয় ত আমি থাকব দুঃখ-কান্নার সুদূর পারে।

চমন্‌

আচ্ছা মা! তুমি ত ম’রে শান্তি পেয়েছ, কিন্তু এ কি অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে গেলে আমার প্রাণে? আমি চিরদিনই বলেছি, না—না—না, আমি এ পাপের বোঝা বইতে পারব না, কিন্তু তা তুমি শুন্‌লে কই? সে কথা শুধু হেসেই উড়িয়ে দিলে, যেন আমার মনের কথা সব জান আর কি?... এই যে বেদৌরাকে আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে গেলে, এর জন্যে দায়ী কে? এখন যে আমার সকল কাজেই বাধা! কোথাও পালিয়েও যে টিকতে পারছি নে... আমি আজ বুঝতে পারছি মা, যে, আমার এই ঘর ছাড়া উদাস মনটার স্থিতির জন্যেই এই পুষ্প শিকলটা তোমার চির-বিদায়ের দিনে নিজের হাতে আমায় পরিয়ে গিয়েছ। ঐ মালাই ত হয়েছে আমার জ্বালা! লোহার শিকল ছিন্ন করবার ক্ষমতা আমার আছে, কিন্তু ফুলের শিকল দ’লে যাবার মত নির্মম শক্তি ত নেই আমার!... যা কঠোর তার ওপর কঠোরতা সহজেই আসে, কিন্তু যা কোমল, পেলব, নমনীয় তাকে আঘাত করবে কে? তারই আঘাত যে আর সইতে পারছি নে!

 হতভাগিনী বেদৌরা! সে কথা কি মনে পড়ে,— সেই