পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম উপদেশ।

জ্ঞানেতে অনন্ত—তিনি শক্তিতে অনন্ত—তিনি মঙ্গলভাবে অনন্ত—তিনি দেশেতে অনন্ত— তিনি কালেতে অনন্ত।

 যখন তাঁহার জ্ঞানের সহিত অনন্ত ভাবকে মিলিত করি, তখন তাঁহাকে সর্ব্বজ্ঞ বলি। তিনি ভূত ভবিষৎ বর্তমান সকল কালের সকল ব্যাপার বিশেষ রূপে অবগত হইতেছেন। তিনি যেমন বাহিরের সমস্ত বিষয় জানিতেছেন, সেই প্রকার আমাদের অন্তরের প্রত্যেক কামনা ও প্রত্যেক ভাব সম্যক অবধারণ করিতেছেন। অন্ধকার তাঁহার নিকটে কোন কুকর্ম্মকে গোপন রাখিতে পারে না এবং কপটতাও তাঁহার জ্ঞান হইতে সত্যকে আচ্ছন্ন করিতে পারে না। তাঁহার অনন্ত জ্ঞানের গুরুভার পরিমাণ করিয়া শেষ করা যায়।

 যখন তাঁহার মঙ্গলস্বরূপ এবং অনন্ত ভাব একত্র করি, তখন তাঁহাকে পূর্ণ-মঙ্গল বলি। মন্দের সঙ্গে তাঁহার লেশমাত্র সম্পর্ক নাই। কোন দোষ বা গ্লানি বা কলঙ্ক তাঁহাকে স্পর্শ করিতে পারে না। আলোকের সীমা কি? না, অন্ধকার। জ্ঞানের সীমা কি? না, অজ্ঞান। সদ্ভাবের সীমা কি?, অসদ্ভাব। মঙ্গলের সীমা কি? না, অমঙ্গল ঈশ্বর কোন সীমা বিশিষ্ট পদার্থ নহে। মনুষ্যের বিষয়ে যখন আমরা এই প্রকার বলি যে এ ব্যক্তির এত গুলি গুণ আছে, তখনই ইহাও বলা হইল, যে তাহার এতটকু দোষও আছে। কিন্তু ঈশ্বরের মঙ্গল ভাবের সীমা করা যায় না। তাঁহার জ্ঞানের সীমা নাই বলিয়া তিনি সর্বজ্ঞ; তাঁহার মঙ্গলভাবের সীমা নাই বলিয়া তিনি পূর্ণ মঙ্গল।