বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ভবিষ্যতের বাঙালী.djvu/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভবিষ্যতের বাঙালী
১০

ভারতবর্ষে কখনও দেখা দেয়নি। আর তাই কেন্দ্রীয় শক্তি যখনই দুর্ব্বল হয়েছে, স্বাভাবিক ঐক্যের উপর নির্ভর ক’রে বিভিন্ন খণ্ড রাষ্ট্রগুলি তখনই মাথা তুলেছে।

 ভারতবর্ষে স্থায়ী রাষ্ট্রসংগঠন করতে হ’লে দু’টি জিনিষের দিকে লক্ষ্য রাখা, আর রাষ্ট্রজীবনে তাদের উভয়বিধ প্রয়োজন পরিপূরণের সুব্যবস্থা করা একান্ত দরকার। চতুঃসীমানার প্রাকৃতিক সীমান্তের দিকে লক্ষ্য রেখে সমস্ত ভারতবর্ষে এক সম্মিলিত রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠান গঠন করা দরকার; এবং অন্তরের স্বাভাবিক সহানুভূতির দিকে লক্ষ্য রেখে কৃষ্টিগত (কালচার), ভাষাগত ঐক্যের ভিত্তির উপর দেশে বিভিন্ন খণ্ড রাষ্ট্রের বা উপরাষ্ট্রের সৃষ্টি করা দরকার। এই ভাবে অগ্রসর হ’লে, ভারতের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রে আমরা সাম্রাজ্যের শক্তি, আর জাতির জীবনের সুখ-শান্তি, নৈতিক বল এবং আত্মিক প্রেরণা— উভয়বিধ সুবিধাই লাভ করতে পারব। একের মধ্যে বহুত্ব, আর বহুর মধ্যে একত্ব—এই উভয়বিধ মঙ্গলের সমাবেশে আমাদের জাতীয় জীবন অভিনব ঐশ্বর্য্য লাভ করবে।

 দেশপ্রেম আমাদের যতই উগ্র হ’ক না কেন, বাস্তবতাকে ভুলে রাষ্ট্র গড়তে গেলে আমরা মারাত্মক ভুল করব। কেন না, একমাত্র বাস্তবতাই হ’ল আদর্শ-সৌধের প্রকৃত ভিত্তি। সেই বাস্তবতার দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে, সহজেই আমরা বুঝতে পারব, সমস্ত ভারতবর্ষকে এক অখণ্ড কেন্দ্রীয় শাসনের অন্তর্ভুক্তি করার প্রয়াস শেষ পর্যন্ত অসন্তোষ এবং ব্যর্থত। এনে দেবে। কেন না, সমগ্র ভারতবর্ষের মধ্যে ভাষার ঐক্য নাই, কৃষ্টির ঐক্য নাই, স্বার্থের ঐক্য নাই, ধর্ম্ম এবং গোষ্ঠীর ঐক্য ও নাই। এরূপ ক্ষেত্রে কৃত্রিম উপায়ে একটা বাহ্য একতানয়নের প্রয়াসে সমাজের অন্তর্নিহিত অনৈক্য আরও স্পষ্টতর