VO) ভবিষ্যতের বাঙালী লাঞ্ছিত, উৎপীড়িত করে । আর যে সব সঙ্কীর্ণমনা স্বাৰ্থসেবী তাদের কুসংস্কারে প্রশ্রয় দেয়, তাদের তারা ধৰ্ম্মের এক একটি ধুরন্ধর মনে করে, প্ৰকৃত ধৰ্ম্মাত্মাদের লাঞ্ছনায় তাদেরই নির্দেশ এবং ইঙ্গিতের অনুসরণ করে। ধৰ্ম্ম যেখানে রাষ্ট্ৰীয় ক্ষমতা লাভ করেছে, সেইখানেই শাশ্বত সত্যের বিরুদ্ধে, প্ৰকৃত ধৰ্ম্মাত্মাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্ৰীয় উৎপীড়নের অভিযান চালিত হয়েছে, আর তার ফলে উন্নতির পথ ছেড়ে সমাজের অধোগতি হয়েছে ; 'ব্যক্তিগত স্বাৰ্থ এবং অন্ধ কুসংস্কারের সঙ্গে দুৰ্ব্বার রাষ্ট্ৰশক্তি যোগ দিয়েছে আর উভয়ে মিলে সত্যকে পদদলিত করেছে। ধৰ্ম্মকে রাষ্ট্ৰশক্তির আসনে প্রতিষ্ঠিত করার মানেই হ’চ্ছে সেই অতীত যুগের বর্বরতার পুনরাভিনয় । আজ আর কোন চিন্তাশীল ব্যক্তিই সে পথের সমর্থন করতে পারে না । তারপর যে সব তথ্যের আলোচনা, যে সব বিষয় সম্বন্ধে বিস্তারিত ধারণা এবং মতবাদ ধৰ্ম্মশাস্ত্ৰে পাওয়া যায়, সেই সব তথ্য এবং বিষয় নিয়ে দর্শন এবং বিজ্ঞান আলোচনা করেছে এবং নিত্যই করছে । তবে উভয়ের দৃষ্টিভঙ্গী ভিন্ন, আর উভয়ে বিচারের ভিন্ন ভিন্ন ধরণের মানদণ্ড ব্যবহার করে । ধৰ্ম্মের মানদণ্ড (Authority) হ’চ্ছে শাসুশাসন ও শাস্ত্রকারের বাণী ; আর বিজ্ঞানের মানদণ্ড হচ্ছে পরীক্ষামূলক বাস্তবতার তাশদীক (verification) বা সমর্থন। ধৰ্ম্ম দেখে, বিশেষ কোন মতবাদের সমর্থন ধৰ্ম্মের মূল গ্রন্থে কিম্বা ধৰ্ম্মপ্ৰবৰ্ত্তকদের প্রামাণ্য উক্তি ও চিন্তাধারার মধ্যে পাওয়া যায় কি না । দর্শন এবং বিজ্ঞান দেশে --মতবাদটি বাস্তব জগতের সঙ্গে (objective reality) সঙ্গে খাপ খায় কি না । এরূপ অবস্থায় প্ৰচলিত ধৰ্ম্মের সঙ্গে দর্শন এবং বিজ্ঞানের সংঘর্ষ অধিকাংশ ক্ষেত্রে অনিবাৰ্য্য। এ সংঘর্ষের অসংখ্য দৃষ্টাস্ত মধ্যযুগীয় ইউরোপের ইতিহাসে পাওয়া যায়। সেই সংঘর্ষের ফলেই জাতীয় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত রাষ্টের আবির্ভাব হয়েছে। ধৰ্ম্ম না হ’লে
পাতা:ভবিষ্যতের বাঙালী.djvu/৩৪
অবয়ব