পাতা:ভবিষ্যতের বাঙালী.djvu/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভবিষ্যতের বাঙালী (* o. তখন আদর্শ বলেই মেনে নিয়েছিল, আর ইংরেজের প্রবৰ্ত্তিত শিক্ষাকে শিক্ষার আদর্শ পন্থা বলেই গ্ৰহণ করেছিল। তাই ইংরেজের রচিত। ইতিহাসকে বেদবাক্যের মতই অকাট্য ব’লে তাদের মেনে নিতে সে-সময়ে কোন সংশয়ই জাগেনি। ইংরেজ মুসলমানদের কাছ থেকে সবেমাত্র ভারতবর্ষ দখলে এনেছে । এজন্য স্বভাবতই তারা মুসলমানদের প্ৰতি এবং তাদের ধৰ্ম্ম ইসলামের প্রতি বৈরি-ভাব পোষণ করত । নিজেদের স্বাৰ্থসিদ্ধির জন্য এবং স্বকাৰ্য্যের সমর্থনের জন্য মুসলমান জাতি এবং ইসলাম ধৰ্ম্মকে মসীবর্ণে চিত্রিত করতে তখনকার যুগে তারা কোনরূপ কুণ্ঠাবোধ করত না । তাদেরই লেখা প’ড়ে বাঙ্গালী হিন্দুর মনে মুসলমানদের প্রতি ঘূণা এবং অবজ্ঞার ভাব স্বতঃই জেগে উঠা স্বাভাবিক, আর সে ভাব প্ৰকাশ পেয়েছিল তাদেরই সৃষ্ট তখনকার বাংলা সাহিত্যে । সে যুগের বাংলা সাহিত্যের অনেকখানি তাই মোসলেম-বিদ্বেষে ভারাক্রান্ত । সে সাহিত্য হিন্দু-মোসলেম বিরোধ জাগিয়ে রাখতে বিশেষভাবে কাৰ্য্যকারী হয়েছে ! তখনকার যুগের ভারতীয়েরা আমলাতন্ত্রমূলক ইংরেজ-শাসনকে চন্দ্ৰ-সূৰ্য্য, গ্ৰহ-তারকার মতই চিরস্থায়ী নিসর্গের অন্তৰ্গত ব’লে মনে করত, আর সেই শাসনের অধীনে হিন্দু-মুসলমানের নিবিড় মিলনের তারা বিশেষ কোন প্রয়োজন অনুভব করে নি ; তাই তাদের সৃষ্ট সাহিত্যে সে মিলনের কোন উল্লেখযোগ্য প্ৰয়াস দেখতে পাওয়া যায় না। অবশ্য তখনকার যুগের কোন কোন কবি স্বাধীনতার বিষয়ে সুন্দর সুন্দর কবিতা লিখেছেন । কিন্তু তেঁাদের সেই সব রচনাকে নিছক ভাবানুশীলনের উৰ্দ্ধে স্থান দেওয়া যায় না। স্বাধীন আত্মনিয়ন্ত্রণশীল ভারতবর্ষের কোন সুস্পষ্ট ছবি বা পরিকল্পনা তাদের মনে ছিল না এবং থাকাটাও স্বাভাবিক নয়। টড প্ৰভৃতি একদেশদর্শী ঐতিহাসিকদের