বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ভবিষ্যতের বাঙালী.djvu/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভবিষ্যতের বাঙালী br আর তাদের এখন সে ক্ষমতাও নাই । তবে প্ৰগতিপন্থী মুসলমানেরা হিন্দুদের সঙ্গে যোগ দিয়ে এক ব্যাপকতর সভ্যতার, জীবনাদর্শের এবং সাহিত্যের সৃষ্টি করবার চেষ্টা করছেন । তঁদের সে প্রচেষ্টা বাংলার জীবনে যথেষ্ট প্রভাবও বিস্তার করছে। এ যে আশার কথা, সন্দেহ নেই । চণ্ডীদাস, বিদ্যাপতি প্ৰভৃতির যুগের কথা এখানে বলব না। ভারতচন্দ্র, আলাওয়াল প্ৰভৃতির যুগের আলোচনাও করব না। বিদ্যাসাগরের যুগ থেকেই আরম্ভ করা যাক । বিদ্যাসাগরী সাহিত্যে সে-যুগের পণ্ডিতী মনোভাব বিদ্যমান। ভাষা টোলের পণ্ডিতের মত, আর ভাবও টোলের পণ্ডিতেরই মত। তারপর এলেন বঙ্কিমচন্দ্র। তিনি পণ্ডিতী ভােব এবং ভাষা ছেড়ে আধুনিক ভােব এবং ভাষার স্বষ্টি করলেন। বাংলা ও বাঙালীর সূভ্যতা বিশ্বসভ্যতার আওতায় এসে দাঁড়াল, বিশ্বসভ্যতার সঙ্গে নেওয়াদেওয়া হ’ল তার সুরু। বাঙালীর চিন্তা-জগতে এক বিপ্লব এসে দেখা দিল। এত বড় বিপ্লব বাংলা দেশে পূর্বে বোধ হয়। কখনও আসেনি। সে যুগের বাংলা সাহিত্যে সেই মানসিকতা পরিপূর্ণ মাত্রায় প্রতিফলিত হয়েছে। তারপর এল রবীন্দ্ৰ-যুগ । সে যুগের পরিসমাপ্তি ঘটল মহাকবির মহাপ্রয়াণে। কিন্তু নূতন যুগের আগমনী-গান স্পষ্টতার হ’য়ে উঠেছে শরৎচন্দ্রের উপন্যাসে, সত্যেন্দ্ৰনাথের কবিতায়-যদিও উভয় মনীষীই রবীন্দ্রনাথের পূর্বেই পরলোকে চ’লে গিয়েছেন। | রবীন্দ্রনাথের যুগ এবং রবীন্দ্ৰ-সাহিত্য বঙ্কিমচন্দ্রের যুগ থেকে এবং বঙ্কিমযুগের সাহিত্য থেকে ক্রমবিকাশের পথে স্বতঃই ক্ষুৰ্ত্তিলাভ করেছে। উভয় সাহিত্যেই দেখতে পাই আভিজাত্যের মহিমা-কীৰ্ত্তন ; উভয় সাহিত্যেই দেখতে পাই সামন্তবাদের উপর প্রতিষ্ঠিত সমাজের ভূমিকা ; উভয় সাহিত্যই ভারত অর্থে হিন্দু-ভারতের কথাই বলেছে এবং বুঝেছে ; উভয় সাহিত্যেই দেখতে পাই ভিক্টোরিয়ান স্বাধীন চিন্তাকে