পাতা:ভারতকোষ - প্রথম খণ্ড.pdf/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

ফিরিয়া বাম হাতে একটি দণ্ড লইয়া উহা ভাঙিয়া দেওয়া হয়। আগুনের দিকে আর না তাকাইয়া স্নান করিতে যাইতে হয়। বাড়ির দরজায় ফিরিয়া নিমের পাতা দাতে কাটিয়া শমী প্রস্তর অগ্নি বৃষ ছাগ জল গােময় শ্বেতসর্ষপ স্পর্শ করিয়া শিশুকে আগে লইয়া বাড়িতে প্রবেশ করা নিয়ম। দিবসে দাহ হইলে রাত্রিতে গ্রামে প্রবেশ করিতে হয় এবং রাত্রে দাহ হইলে দিনে প্রবেশ করিতে হয়। | গর্ভবতী নারীর শব দাহ করিবার পূর্বে গর্ভস্থ সন্তান নিষ্কাশিত করিয়া মাটিতে প্রােথিত করিতে হয়। কাহারও যথানিয়মে শব সংকার না হইয়া থাকিলে, সৎকার সম্বন্ধে কোনও নির্ভরযোগ্য সংবাদ না পাওয়া গেলে অথবা দ্বাদশ বৎসর কেহ নিরুদ্দেশ থাকিলে পৰ্ণনর ( চলতি কথায় কুশপুত্তলিকা) দাহের ব্যবস্থা আছে। এই ব্যবস্থা অনুসারে মেষললামের সূত্রের দ্বারা গ্রথিত শরপত্র ও পলাশপত্রের সাহায্যে নরকৃতি পুত্তলিকা নির্মাণ করিয়া নারিকেল ফলের দ্বারা উহার মস্তক প্রস্তুত করিতে হয় এবং যবের পিটুলি দ্বারা ঐ পুত্তলিকা লেপিয়া দিয়া যথানিয়মে দাহ করিতে হয়। সাধুসন্ন্যাসী বা দুই বৎসর বয়সের কম। শিশুর শব দাহ না করিয়া ভূগর্ভে সমাহিত করিবার বিধি আছে। সর্পদংশনে মৃত ব্যক্তির শব জলে ভাসাইয়া দেওয়ার প্রথা কোথাও কোথাও দেখা যায়। শবদাহের সংগতি যাহাদের নাই তাহারা শবের মুখে আগুন ছোয়াইয়া। জলে ভাসাইয়া দেয়। ঐ রঘুনন্দনের শুদ্ধিত ; P. V. Kane, History of । Dharmasastra, vol. IV, Poona, 1953.

| চিন্তাহরণ চক্রবর্তী। অন্ত্যেষ্টি পার্শী ( জরথুস্ত্রীয় ) অন্ত্যেষ্টি প্রথার অনুষ্ঠান রবািদ-এর জনস্বাস্থ্য সূত্রানুযায়ী পালিত হয়। প্রথমতঃ মৃতের শরীর স্নান করাইয়া শ্বেতবস্ত্রাচ্ছাদিত করা হয়, পরে শিলাসনে দেহ শায়িত করা হয় এবং মৃতের নিজ গৃহে। অথবা স্থানীয় পার্শী সমাজের মিলনকেন্দ্রে একটি কুকুর সাক্ষী করিয়া ও অগ্নি লইয়া একটি সংক্ষিপ্ত ধর্মাচার অনুষ্ঠিত হয়। ইহার পর দেহটিকে আর স্পর্শ করা হয় না। দিবালােকের মধ্যে শবদেহ স্থানান্তরিত করা চলে ; এইসময়ে গাথাসমূহের আবৃত্তি করা হয়; পুরােহিতগণ ও অন্যান্যের শবের অনুগমন করেন। দমা (Dakhma--ইংরেজীতে Tower of Silence অর্থাৎ নিঃশব্দ শান্তির মন্দির’) —শবমন্দিরে গিয়া পরিচ্ছদাদি সরাইয়া লইয়। মৃতদেহটিকে অনাবৃতভাবে দখমার উপরিভাগে উন্মুক্ত আকাশের তলে রাখিয়া দেওয়া হয়। ঐ স্থানে স্নান এবং প্রার্থনাদি

________________

সমাপনান্তে শবানুগামীগণ গৃহে প্রত্যাবর্তন করেন। | তিনদিনের জন্য আমিষ ভােজন নিষিদ্ধ। তিনদিন সন্ধ্যায় | ‘শওষ’ (Sraosha) দেবের স্তব ও মন্ত্রাদি পাঠ করা হয়। তৃতীয় দিনে ‘উথমা’ ( Uthamna) সভার অনুষ্ঠান হয়। আত্মার মুক্তির জন্য চতুর্থ দিবসের ঊষাকালে শেষ বিচারের দিন সম্পর্কিত সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানটি পালন করা হয়। ১ম, ৩০শ এবং ৩৬৫তম দিবসে অন্যান্য অনুষ্ঠান পালিত হয়। ফ্ৰবষী’ ( Fravashi ) অর্থাৎ মহাপুরুষগণের জন্য ১০টি নির্দিষ্ট দিনে পিতৃপুরুষের শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়। আদেশীর দাশ। অ (intestines ) পাকস্থলীর পর হইতে মলদ্বার পর্যন্ত পৌষ্টিক নালীর অংশকে অস্ত্র বলে। এখানে খাদ্যের পাচন ও আত্তীকরণ সম্পন্ন হয়। প্রথম ভাগ ক্ষুদ্রান্ত্র ও দ্বিতীয় ভাগ বৃহদন্ত্র। ক্ষুদ্রান্ত্র প্রায় ৬৫ মিটার দীর্ঘ। ক্ষুদ্রান্ত্রের ভিতরের দিকের গাত্রে থাকে শ্লৈষ্মিক ঝিল্লী, তাহার বাহিরে যথাক্রমে বৃত্তাকার ও লম্বালম্বি পেশীর দুইটি স্তর আছে। ক্ষুদ্রান্ত্র তিনটি অংশে বিভক্ত, অংশগুলি পরস্পর সংলগ্ন ও উহাদের প্রভেদ প্রধানত শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীর গ্রন্থিগুলির আকৃতি-প্রকৃতিতে। ক্ষুদ্রান্ত্রের পাকস্থলী সংলগ্ন প্রথমাংশ ডুয়েডেনাম প্রায় ২৫ সেন্টিমিটার দীর্ঘ ; যকৃৎ ও অগ্ন্যাশয়ের নালীগুলি ইহার মধ্যে অসিয়া পড়িয়াছে। দ্বিতীয় অংশ জেজুনাম দৈর্ঘ্যে ক্ষুদ্রান্ত্রের অবশিষ্ট ভাগের প্রায় দুই-পঞ্চমাংশ। অবশিষ্টাংশের নাম ইলিয়াম। ক্ষুদ্রান্ত্রের গ্রন্থির ক্ষরিত রসকে আন্ত্রিক রস বলে। এই রস ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৩ লিটার পরিমাণে ক্ষরিত হয়। ইহা ক্ষারধর্মী এবং ইহাতে অ্যামাইলেজ, পেপটাইডেজ, এন্টারােকাইনেজ, লাইপেজ, প্রভৃতি এজাইম থাকেপ্রথমটি শর্করার, পরের দুইটি প্রােটিনের ও চতুর্থটি স্নেহজাতীয় পদার্থের পাচনে সাহায্য করে। আন্ত্রিক রস, অগ্ন্যাশয়ের পাচক রস ও যকৃতের পিত্তের মিলিত কার্যে ক্ষুদ্রান্ত্রে শর্করা, প্রােটিন ও স্নেহজাতীয় পদার্থের পচনক্রিয়া সুসম্পন্ন হয় এবং পাচিত খাদ্য ক্ষুদ্রান্ত্র হইতেই রক্তে গৃহীত হয়। ক্ষুদ্রান্ত্রের পেশী শুলির সংকোচনপ্রসারণের ফলে খাদ্য বৃহদন্ত্রের দিকে পরিচালিত হয়।

ক্ষুদ্রান্ত্রের পর বৃহদন্ত্রের আরম্ভ। বৃহদন্ত্র প্রায় ১৫ মিটার দীর্ঘ। ইহা সিকাম ও কোলােন এই দুই অংশে বিভক্ত। সিকাম দৈর্ঘ্যে প্রায় ৬ সেন্টিমিটার ও প্রস্থে প্রায় ৭৫ সেন্টিমিটার। কোলােন আরােহী, আড়াআড়ি,
৫৯