পাতা:ভারতকোষ - প্রথম খণ্ড.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

অন্ধ্র প্রদেশ শস্যশ্যামলা হইয়া উঠিতেছে এবং এই রাজ্যের রূপান্তর ঘটিতেছে। গৃহপালিত পশু-সম্পদে এই রাজ্য সম্পংশালী; ১৯৬১ খ্রীষ্টাব্দের গণনা অনুযায়ী এই রাজ্যে ১২১৮০০ ০০ গবাদি পশু, ১২৬২৯০০০ ছাগ এবং ১৬০৫৭০ ০০ কুকুটাদি গৃহপালিত পক্ষী আছে। | কয়লা, সিমেন্ট, খনিজ তৈল শােধন, জাহাজ নির্মাণ, পাট, বস্ত্র, কাচ, চিনি, তৈল, চর্ম, কাগজ, মৃৎশিল্প (ceramics) এবং সিগারেট এই রাজ্যের মৌলিক ও অন্যান্য বৃহদায়তন শিল্প। ভারতের শিল্পপ্রচেষ্টায় বিশাখপটনমের জাহাজ নির্মাণের কারখানাটির গুরুত্ব সমধিক ; বিশাখপটুনমে একটি খনিজ তৈলশােধনাগারও (oil refinery) অবস্থিত। বিজয়ওয়াডা এবং অন্যান্য স্থানে সিমেন্টের কারখানা আছে ; ১৯৫৮ ও ১৯৫৯ খ্ৰীষ্টাব্দে আদিলাবাদ, গুন্টর এবং কল জেলায় তিনটি নূতন সিমেন্টের কারখানা চালু হইয়াছে। কাপড়ের কলগুলি হায়দরাবাদ, ওয়ারঙ্গল এবং অন্য কতিপয় শহরে অবস্থিত। নিজামাবাদ জেলার বােধন এবং অন্যান্য স্থানে চিনির কল এবং আদিলাবাদ জেলার শিরপুর, রাজমন্ত্রী এবং তিরুপতিতে কাগজের কল আছে ; উক্ত কাগজের কলগুলির মধ্যে একটি রাষ্ট্রীয় মালিকানার অধীন। ১৯৫৯ খ্রীষ্টাব্দে গৃডুরে মৃৎশিল্পের একটি নূতন কারখানায় উৎপাদন আরম্ভ হইয়াছে। সিগারেট কারখানাগুলি হায়দরাবাদ শহরে কেন্দ্রীভূত। তেলিঙ্গানা অঞ্চলটি শিল্পসমৃদ্ধ ; কাপড়ের কলগুলির মধ্যে ১১টিই এই অঞ্চলে অবস্থিত। এই অঞ্চলে দুইটি তুলা এবং জিনিং ইউনিট (ginning unit) এবং শতাধিক তামাক কারখানাও আছে। রাজ্যের শিল্পোন্নয়নের জন্য ইণ্ডাষ্ট্রিয়াল ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন, মিনারেল ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন এবং স্মল-স্কেল ইণ্ডাস্ট্রিজ ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন স্থাপিত হইয়াছে। হায়দরাবাদের নিকটে ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভারি বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির কারখানা, সােভিয়েট ইউনিয়নের সাহায্যে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সিনথেটিক ড্রাগ কারখানা, কোঠগুডেডম এবং বিশাখপটনমে দুইটি সারের কারখানা, কোঠগুডেমে ২৪০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাবিশিষ্ট থার্মাল ইউনিট, সিঙ্গরেনি কয়লাখনিগুলির নিকটে একটি লাে টেম্পারেচার কার্বনিজেশন প্ল্যান্ট এবং একটি এক লক্ষ টন উৎপাদন মতবিশিষ্ট পিগ আয়রন প্ল্যান্ট স্থাপন রাজ্যের শিল্পায়নকে অতি দ্রুত আগাইয়া দিবে। ১৯৩০ খ্রীষ্টাব্দের হিসাব অনুযায়ী রাজ্যে ৫৬০৮৭২ মেট্রিক টন ( ৫৫২০৪০ টন) কয়লা, ৭১৬১০৩ মেট্রিক টন (৭০৪৮২৬ টন) সিমেন্ট,

৬।

________________

অঞ্জ প্রদেশ ১৮৭৩৯৭১৪ মিটার (২০৪৯৪ ০ ০০ গজ ) সুতির পিস্ গুডস, ১৭২ লক্ষ কিলােগ্রাম (৩৭৯ লক্ষ পাউণ্ড) কার্পাস সুতা, ১২৬৭২৪ মেট্রিক টন (১২৪৭২৯ টন) চিনি, ৩৫ ৪৬৯ মেট্রিক টন (৩৪৯১১ টন) কাগজ, ৬৮১ কোটি সিগারেট উৎপাদিত হয়। হস্তচালিত তাঁতশিল্পের বার্ষিক বস্তু উৎপাদনের আনুমানিক পরিমাণ প্রায় ৩৬ কোটি | মিটার (৩৯ কোটি গজ )। অন্যান্য শিল্পের মধ্যে কম্বল ও কয়ার বয়ন, ডাল, সাজি, ঝুড়ি ইত্যাদি বুননও উল্লেখযােগ্য। অন্ধ্র প্রদেশের হস্তশিল্পের মধ্যে করিমনগরের রৌপ্যের ঝালরের কারুকার্য, ওয়ারঙ্গল ও এলুরুর কার্পেট, | নরপুরের লেসের কাজ, নির্মল, কোণ্ডাপল্লী, নাকাপল্লী ও তিরুপতির খেলনা ভারতের বাহিরেও সুপরিচিত ও উচ্চ প্রশংসিত। | কয়লা, লৌহ, চুনা পাথর, ম্যাঙ্গানিজ এবং অ্যাজবেস্ট এই রাজ্যের প্রধান খনিজদ্রব্য। কোঠগুডেডম, তার, ইয়েলা এবং সাস্তি অঞ্চলে কয়লাখনি অবস্থিত ; প্রধান অভ্র অঞ্চলটি নেল্লর জেলায় ; নেলরে ইউ| রেনিয়ামের ভাণ্ডারও আছে। খনিজ শিল্প রাজ্যের সর্বত্র ছড়ানাে। ১৯৬০-৬১ খ্ৰীষ্টাব্দে ৫৬০৮৭২ মেট্রিক টন | (৫৫২৩ ৪০ টন) কয়লা, ২৩৭৪৫ মেট্রিক টন ( ২৩৩৭১ টন) ম্যাঙ্গানিজ, ৩৩৫৭ মেট্রিক টন (৩৩০৪ টন) অভ্র, ২৪ ০ ১৬১ মেট্রিক টন (২৩৬৩৭৯ টন) আকরিক লৌহ, ১০২৭৪৬৯ মেট্রিক টন (১০ ১১২৮৯ টন) চুনা পাথর, ৯১৫ মেট্রিক টন (৯০১ টন) অ্যাজবেস্টস, ২২৩৪৪ | মেট্রিক টন (২১৯৯২ টন) ব্যারাইটস উৎপাদিত হইয়াছে ; ক্রমাইট, চায়না ক্লে, ফেস্পার, ফায়ার ক্লে, স্টিয়াটাই, স্লেট এবং স্ফটিকও উৎপাদিত হয়। গুন্টর এবং নেল্লর জেলায় আনুমানিক মােট ৩৯৫২২৪ ০ ০ ০ মেট্রিক টন ( ৩৮ কোটি ৯০ লক্ষ টন) আকরিক লৌহের দুইটি বিশাল ভাণ্ডার আবিষ্কৃত হইয়াছে। গত চতুর্দশ বৎসরে এখানে কতিপয় বিদ্যুৎ পরিকল্পনা চালু করা হইয়াছে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন বহুল পরিমাণে বৃদ্ধি পাইয়া বর্তমানে বৎসরে ৮৮১ মিলিয়ন কিলোওয়াটের | অধিক হইয়াছে ; এই সময়ের মধ্যে মাছকুন্দ ( উৎপাদন : ১৫৫১৪৯ মিলিয়ন ইউনিট ), তুঙ্গভদ্রা ও নিজামসাগর | ( উংপাদন : ১৬৫ ৭৮ মিলিয়ন ইউনিট) জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র, বিশাখপটুনম, বিজয়ওয়াডা, নেল্লর, ও রামকুম তাপ| বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং গিদ্দলুর, কুসুমে ও মার্কাপুরে ডিজেল | কেন্দ্র স্থাপিত হইয়াছে।

এই রাজ্যে পরিবহন ও সংযােগব্যবস্থা উন্নত পর্যায়ের। | বিশাখপটুম বন্দর ভারতের ৬টি প্রধান বন্দরের অন্যতম।
৬৬