পাতা:ভারতকোষ - প্রথম খণ্ড.pdf/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

অন্ধ্র প্রদেশ ১৯৫৬-৫৭ খ্রীষ্টাব্দে এখানে মােট ১৪৭৭৮৬১ মেট্রিক টন ( ১৪৪৮৮৮৩ টন) মাল ওঠানাে-নামানাে হয় ; ৯ মিটার (২৮ ফিট ) ড্র (draw) -এর এবং ১৬৮ মিটার (৫৫০ ফিট) দৈর্ঘ্যের জাহাজ এখানে আসিতে পারে ; বিভিন্ন সুযােগ-সুবিধাসহ কতকগুলি বার্থ আছে ; তাহার মধ্যে কতকগুলি ম্যাঙ্গানিজ, আকরিক লৌহ, কয়লা ও তৈলের জন্য ব্যবহারযােগ্য ; ৯২ মিটার (৩০ ০ ফিটের) ছােট পােতের জন্য ব্যবহারযােগ্য ১১২ মিটার X ১৯ মিটার (৩৬৬ ফিট x ৬০ ফিট) একটি ড্রাই ডক আছে। বিশাখপম বৃহৎ বন্দরটি ব্যতীত এই রাজ্যে ৬টি মাঝারি ও ক্ষুদ্র বন্দর আছে ; তাহাদের মধ্যে বিশেষ ভাবে কাকিনাড়া ও মসুলিপট্টমের নাম করা যাইতে পারে। অন্ধ্র অঞ্চলে নৌকার সাহায্যে পরিবহনের কাজ অংশত নির্বাহিত হয়। ১৯৫৮ খ্রীষ্টাব্দের ৩১ মার্চের হিসাব অনুযায়ী অন্ধ্র প্রদেশে ২৬৭১ কিলােমিটার ( ১৬৬০ মাইল ) ব্রড গেজ, ১৮৪০ কিলােমিটার (১১৪৪ মাইল ) মিটার গেজ এবং ৩৭ কিলােমিটার ( ২৩ মাইল ) ন্যারােগেজ— অর্থাৎ প্রায় ৪৫৫০ কিলােমিটার ( ২৮২৭ মাইল) রেলপথ আছে। সেন্টাল রেলওয়ের সিকন্দরাবাদ বিভাগের সদর সিকন্দরাবাদ শহরে অবস্থিত ; ব্রড গেজ ও মিটার গেজ ব্যবস্থা এখানে সংযুক্ত হইয়াছে এবং এইস্থান হইতেই রেলপথগুলি পূর্ব, দক্ষিণ, পশ্চিম ও উত্তরে বিস্তৃত হইয়াছে। ১৯৬১ খ্রীষ্টাব্দে এই রাজ্যে অন্ন ২২৫৩ কিলােমিটার ( ১৪০০ মাইল ) ন্যাশনাল হাইওয়ে, ৫৬৩৩ কিলােমিটার (৩৫০০ মাইল ) স্টেট হাইওয়ে, ১৩১৯৭ কিলােমিটার ( ৮২০০ মাইল) মেজর ডিস্ট্রিক্ট রােড, ৪৫০৬ কিলােমিটার ( ২৮০ ০ মাইল ) অন্যান্য ডিস্ট্রিক্ট রােড ও ৫৪৭২ কিলােমিটার (৩৪০০ মাইল) ভিলেজ রােড- প্রায় ৩১০ ৬১ কিলােমিটার ( ১৯৩০ ০ মাইল) রাস্তা ছিল। দুইটি সরকারি পরিবহন প্রতিষ্ঠান তেলিঙ্গানায় এবং অন্ধ্রের কৃষ্ণা অঞ্চলে বাস চলাচল পরিচালনা করে। বােম্বাই, নাগপুর, মাদ্রাজ, বিশাখপটুনম, বাঙ্গালুর, দিল্লী ও কলিকাতা শহরের মধ্যে নিয়মিত বিমান চলাচল ব্যবস্থা চালু আছে। হায়দরাবাদ শহরের বেগমপেটে একটি বিমানবন্দর আছে ; বিজয়ওয়ালা এবং বিশাখপটনমের নিকটে বিমান অবতরণের ব্যবস্থা আছে। হায়দরাবাদ ও বিজয়ওয়াডায় আকাশবাণীর দুইটি বেতারকেন্দ্র অবস্থিত।

দ্বাদশ বৎসর অন্তর পুষ্করম আন-উৎসব উপলক্ষে রাজমীতে গােদাবরী তীরে বহু তীর্থযাত্রী সমাগত হন। রামনবমীতে রাজমন্ত্রী হইতে ১৬১ মিটার (১০০ মাইল )।

________________

অন্ধ্র প্রদেশ | দূরবর্তী ভদ্ৰাচলমে রামচন্দ্রের মন্দিরে বিশাল জনসমাগম হয়। কল জেলায় শ্রশৈলমে ভাস্কর্যমণ্ডিত মল্লিকার্জুন | মন্দিরের শিবলিঙ্গটি ভারতের দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম। শিবরাত্রির পূজা উপলক্ষে হাজার হাজার তীর্থযাত্রী এই পুণ্যস্থান দর্শন করেন। তিরুপতিতে সপ্তপর্বত বলিয়া খ্যাত বেঙ্কটাচলপতির তিরুমলৈ-এর মন্দির দ্রাবিড় শিল্পকলার একটি উৎকৃষ্ট নিদর্শন। এখানে সারা বছর ধরিয়া অগণিত যাত্রী সমাগম হয়। সপ্তপর্বতে কপিলতীর্থম, আকাশগঙ্গা, পাপনাশম ইত্যাদি পুণ্য সরােবর ও জলপ্রপাত অবস্থিত। মক্কেশ্বর বা জয়সেন (শিব) -এর মাহাত্ম বিজড়িত বিজয়ওয়াডাতেও অনেকে তীর্থযাত্রা উপলক্ষে আগমন করেন। এই স্থানটির চতুর্দিকে অনেক টিলা আছে। তাহার মধ্যে কনকদুর্গ ও ইন্দ্রকীলের নাম করা যাইতে পারে। হায়দরাবাদে মক্কা মসজিদে এক সঙ্গে ১০ ০০০ মুসলমান প্রার্থনা করিতে পারেন; এখানে | প্লাস্টারের উপর ফ্রেসকোর কারুকার্য লক্ষণীয়। কাজী পেটের নিকট প্রতি বৎসর ‘দরগা উরস্ প্রতিপালিত

| এই রাজ্যের সমাজজীবন বৈচিত্র্যময়। কতিপয় সর্বভারতীয় উৎসব ব্যতীত এই অঞ্চলে কয়েকটি বিশেষ স্থানীয় উৎসব প্রচলিত আছে। ইহাদের মধ্যে তিনদিনব্যাপী সংক্রান্তি পণ্ডগ ( মকর সংক্রান্তি ) প্রধান। প্রথম দিন ভােগী-পােঙ্গলি পারিবারিক উৎসবরূপে পালিত হয় ; | দ্বিতীয় দিন মকর সংক্রান্তিতে স্ত্রীলােকেরা সুর্যকে পােঙ্গলি ( চাল, গুড় ও দুধের তৈয়ারি শুষ্ক মিষ্টান্ন ) নিবেদন করেন। এই দিনটি বিশেষ আনন্দের সহিত প্রতিপালিত হয়। তৃতীয় দিবস মাত্ত-পােঙ্গলি। ঐদিন গ্রাম দেবতাগণকে নিবেদিত পােঙ্গলি গবাদি পশুকে খাইতে দেওয়া হয়। গােকুল অষ্টমী (জন্মাষ্টমী ) -তে বালকবালিকার কৃষ্ণের জীবনী বিষয়ে গান করে। আমাদের দেশের দুর্গাপূজার অনুরূপ ও একই সময়ে অনুষ্ঠিত নবরাত্রি উৎসবের প্রথম তিন দিবস লক্ষ্মী দেবীর উদ্দেশে, পরবর্তী তিন দিবস শক্তি বা পার্বতী দেবীর উদ্দেশে এবং | শেষ তিন দিবস সরস্বতী দেবীর উদ্দেশে নিবেদিত। প্রতি গৃহে একটি সুসজ্জিত মঞ্চের উপর পূজিত দেব-দেবী ও তাহাদের বাহনদের মৃন্ময় মূর্তি এবং নানাপ্রকার খেলনা শােভা পায়। পূজা উপলক্ষে আত্মীয়-বন্ধুদের প্রীতি উপহার দেওয়ার রীতি প্রচলিত। দেবী দুর্গার প্রতীকরূপে মঙ্গলকস প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বালিকারা | এতদুপলক্ষে নৃত্যগীত করে। অষ্টম দিবসে-কোনও কোনও স্থানে দশম দিবসে আয়ুধ-পূজা অনুষ্ঠিত হয়। বিজয়া
৬৭