বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ভারতবর্ষে.djvu/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কলিকাতা, দার্জ্জিলিং ও সিংহল।

কালসহকারে গ্রহের উপর গ্রহের পতন সংঘটন করিয়া, পরিণামে আপনার সেই অনির্দ্দেশ্য আদিম শক্তিতে ফিরিয়া যাইতেছে—যাহা হইতে সূর্য্য, গ্রহনক্ষত্র, সমুদ্র, মহাদেশ, উদ্ভিজ্জ, সমস্ত জীবপুঞ্জ পুনর্ব্বার নিঃসৃত হইতে পারে। কে বলিতে পারে, এক সৌর-জগৎ ঘুরিতে ঘুরিতে ক্রমে আর এক সৌরজগতের উপর পড়িয়া কালে সমস্ত সৃষ্টিই বিনাশ প্রাপ্ত হইবে না। হিন্দুর প্রজ্ঞা-চক্ষু এই সম্ভাবনীয় নিয়মের একটু আভাস পাইয়াছে; কারণ, তাহারা বলেন, কত অসংখ্য যুগে ব্রহ্মার একদিন হয়। সেই কালের মধ্যে নির্গুণ ব্রহ্ম অভিব্যক্ত হইয়া, বিকশিত হইয়া, জীব সৃষ্টি করিয়া, সচেতন হইয়া, পুনর্ব্বার আপনাকে সঙ্কুচিত করিয়া নির্গুণ অবস্থায় প্রত্যাবর্ত্তন করেন। এই শক্তির রূপক হিন্দুরা আর কিরূপে কল্পনা করিতে পারে—তাই তাহারা শিবকে ‘সৃষ্টিকর্ত্তা প্রলয়কর্ত্তা’ বলিয়া সম্বোধন করে।”

 গ্রন্থকার হিন্দুধর্ম্মের সর্ব্বাশ্রয়ী ও সর্ব্বসহিষ্ণু উদারভাব ও উহার গঠনপ্রণালী ঠিক ধরিতে পারিয়াছেন। তিনি এক স্থানে এইরূপ বলেনঃ—“কলিকাতায় একজন ইংরাজ আমার নিকট আক্ষেপ করিতেছিলেন, খৃষ্টধর্ম্ম-প্রচারে তেমন সফলতা হইতেছে না। ... ... ব্রাহ্মণেরা ধৈর্য্য, সহিষ্ণুতা ও কৌতুহলসহকারে খৃষ্টধর্ম্ম প্রচারকদিগের কথা শ্রবণ করে। উহাদের ধর্ম্ম এরূপ বহুভাবাত্মক ও বহুমতাত্মক যে উহাকে একটি পদার্থ মনে করিয়া ধরিতে-ছুঁইতে পারা যায় না। ইংরাজ মিশনরির মুসলমানদিগকে ধর্ম্মের তর্কে যেরূপ পরাস্ত করিতে পারে বলিয়া অভিমান করে, হিন্দুদিগকে সেরূপ পরাস্ত করা অসম্ভব। খৃষ্টীয় প্রচারকেরা যতই কেন প্রতিবন্ধক আনয়ন করুন না, তাহাতে হিন্দুধর্ম্মের গতিরোধ হওয়া দূরে থাক্, হিন্দুধর্ম্মের জীবনী-শক্তি ও উপযোগিনী-শক্তি এত বলবতী