পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৮
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

পর্য্যায়ভুক্ত না করিয়া পারা যায় না। অথচ কেবল নাট্যরসের দ্বারা ইহা সুগৃহীত হইল বলিয়া বলা যায় না। একথা বলা চলে যে কবি যেমন তাহার কাব্যে শৃঙ্গার বীর হাস্য করুণ প্রভৃতি রস ভাষায় ফুটাইয়া তুলেন শিল্পীও তেমনি ঐ সমস্ত রস পাথরের ভঙ্গীতে বা রেখা ও বর্ণভঙ্গীতে প্রকাশ করেন। চিত্রী যদি সেই সমস্ত রস সুষ্ঠুভাবে প্রকাশ করেন তবে দর্শকের মনে কাব্যরসজাতীয় রসোৎপত্তির কি প্রতিবন্ধ হইতে পারে তাহা কল্পনা করা যায় না। আমরা উত্তররামচরিতে চিত্রদৰ্শন প্রস্তাবে পড়িয়াছি যে, বনবাসের নানা চিত্র দেখিয়া জানকী ভয়শোকাদিতে আপ্লুত হইয়া উঠিয়াছিলেন। কাজেই এই জাতীয় রস সম্বন্ধে চিত্রপ্রণোদিত রস ও কাব্য-নাট্য-প্রণোদিত রসের মধ্যে কোনও পার্থক্য আছে ইহা স্বীকার করা যায় না। কিন্তু এই সমস্ত রসের দিক ছাড়িয়া দিলেও কেবলমাত্র অবয়বানুকৃতির সৌন্দর্য্যের দ্বারা আমাদের চিত্তে সামঞ্জস্য বাসনার পরিপোষকতায় যে আনন্দ উৎপন্ন হয় সেই সৌন্দর্যের আনন্দকে কোনও নাট্যরসের অন্তর্ভুক্ত করা যায় না। এইজন্যই শিল্পশাস্ত্রে এতাদৃশ সৌন্দর্যবোধস্থলে যে রস হয় তাহাকে একটা স্বতন্ত্র স্থান দিতে বাধ্য হইয়া তাহাকে “প্রেমা” এই নাম দিয়াছেন। এই প্রেমাকে রস না বলিয়া উপায় নাই, কারণ এই সামঞ্জস্য বোধের দ্বারা চিত্রীর চিত্তে যে আনন্দ উৎপন্ন হয় তাহা লোকোত্তর-চমৎকার-প্রাণ হলাদময় বেদ্য-বেদক-স্পর্শকশূন্য এবং দেশকাল-বিশেষাদ্যনালিঙ্গিত স্বভাব। কেবলমাত্র কোন পুরুষের বা কোন নারীর কোন একটা