পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

সেইগুলিই দেখাইবার চেষ্টা করা হয়। নৃত্যই শ্রেষ্ঠ চিত্র। নৃত্যকে শ্রেষ্ঠ চিত্র বলিবার তাৎপর্য্য বোধ হয় এই যে, সমগ্র জগৎময় শক্তির যে ক্রিয়ালীলা চলিয়াছে, বৃক্ষলতা তরুগুল্ম হইতে আরম্ভ করিয়া ইতরপ্রাণী, মনুষ্য ও দেবযোনির মধ্যে অন্তরের নানাবিধ ভাবের প্রস্ফুটনে ও তৎ-সহচরিত নানা দৃষ্টিভঙ্গীতে, নানা প্রকার শরীরাবয়বের আকার ইঙ্গিতে, তাহার অভিব্যক্তির যে অজস্র ক্রীড়ালীলা চলিয়াছে, নৃত্যের গতিভঙ্গীর দ্বারা তাহাকে যেরূপ প্রকাশ করা যায়, স্থিতিশীল চিত্রের মধ্যে তাহাকে সেরূপ প্রস্ফুটিত করা যায় না। নৃত্যকে শ্রেষ্ঠ অনুকৃতি বলাতে কি জাতীয় অনুকৃতিকে শ্রেষ্ঠ অনুকৃতি প্রাচীনেরা বলিতেন তাহাও প্রকাশ পায়। কোনও নৃত্যের ভঙ্গীর দ্বারা কোনও প্রাকৃতিক বস্তুর যথাযথ দৃষ্ট-স্বরূপের অনুকরণ সম্ভব নয়। একটি নর্ত্তকী লতার ন্যায় ভঙ্গী করিলে তাহার মধ্যে একটি পদ্মলতার পাতা দেখা যাইবে না, ফুলও দেখা যাইবে না, ডাঁটাও দেখা যায় না; তবে নৃত্যকে কি হিসাবে অনুকৃতি বলা যায়? একটি লতায়িত নৃত্যকে যদি লতার অনুকরণ বলিতে হয় তবে তাহাকে লতার জীবনের মধ্যে যে লাবণ্যময় স্বচ্ছন্দবাহী প্রাণশক্তির তরঙ্গায়িত রূপপ্রবাহ চলিয়াছে তাহারই অনুকরণ বলিতে হয়। নচেৎ কোনও নর্ত্তকীকে লতা বলিয়া ভ্রম হইবার কথা নহে এবং সেরূপ অনুকরণ কোনও নৃত্যেই সম্ভব নহে। অতএব কোন নৃত্যকে যদি ত্রৈলোক্যের অনুকৃতি বলা হয়, তবে ত্রৈলোক্যস্থ নানা বস্তু-