পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

পরিস্ফুট হইয়াছে। চিত্রী যে ছবি আঁকেন, তাঁহার উদ্দেশ্য এ নহে যে কেবল ইন্দ্রিয়দ্বারে যে রূপ, যে আকৃতি ভাসিয়া উঠে, তাহাকে তিনি রেখা বা রংএর দ্বারা বা প্রস্তরের দ্বারা ফুটাইয়া তুলিবেন। বাহিরের রূপকে চিত্রী তাঁহার বুদ্ধির দ্বারা ও হৃদয়ের দ্বারা যেভাবে গ্রহণ করিয়াছেন, তাহাই বস্তুর যথার্থ রূপ। সেই রূপ সম্বন্ধেই তিনি সচেতন। বুদ্ধির মধ্যে যে সমগ্রকে তিনি উপলব্ধি করিয়াছেন, হৃদয়ের রসবৃত্তির অভিযেকে যাহা তাঁহার মধ্যে প্রাণময় হইয়া রহিয়াছে সেই অলৌকিক বিগ্রহকে লৌকিক রূপের পরিচ্ছদের মধ্যে পুনঃসৃষ্টি করাই শিল্পীর যথার্থ চাতুর্য্য। ভারতীয় দর্শনশাস্ত্রের দৃষ্টিবিজ্ঞানের একটি মোটা কথা এই যে চক্ষুরিন্দ্রিয় বিষয়ক্ষেত্রে উপনীত হয় এবং ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে বিষয়ের সংযোগ হইলে বুদ্ধিবৃত্তির প্রভাবে তাহা তদনুরূপ বৌদ্ধরূপে পরিণত হয়, এই বৌদ্ধরূপ চেতনার অভিষেকে প্রাণময় হইয়া ওঠে। কাজেই প্রত্যেক জ্ঞানক্রিয়ার মধ্যে একটি আভ্যন্তরীণ সৃষ্টি-প্রক্রিয়া রহিয়াছে। এই রূপটির বিশেষ তত্ত্ব অবগত হইতে হইলে চিত্তকে ধ্যানের দ্বারা সমাহিত করিতে হয়। ধ্যানসমাহিত হইলেই সেই রূপের যথার্থ প্রাণপ্রদ ধর্ম্ম সাক্ষাৎকৃত হয়। এই জন্য কোথাও কোথাও শিল্পীকে যোগী বলিয়া নির্দ্দিষ্ট করা হইয়াছে। ব্রহ্ম যখন জগৎ সৃষ্টি করিয়াছিলেন, তখন তিনি বহুত্বের ধ্যানে তপস্যা করিয়াছিলেন। সেই তপোগৃহীত বহু নামরূপময় জগৎ হইয়া প্রকাশিত হইয়াছে। শিল্পীও তেমনি