পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
২৩

একটি একটি করিয়া বস্তুর অবয়ব আঁকিয়া তাহাদের যোগফলে সমগ্রের আঁকা শেষ করেন না। বাহ্যরূপ সহযোগে ধ্যানের মধ্য দিয়া তাঁহার চিত্তের মধ্যে সমগ্রের একটি যুগপৎ আবিষ্কার ঘটিয়া থাকে। এই সমগ্র বাহ্যের অনুরূপ হইলেও ইহার মধ্যেই সেই বাহ্যের যে প্রাণপ্রদ ধর্ম্ম চিত্রীর হৃদয়কে বিব্রত করিয়াছে সেই ধর্ম্মের প্রাচুর্য্যের দ্বারা সেই অন্তঃস্থ সমগ্রটি অভিষিক্ত হয়। এই দেশকালরহিত সমগ্রটিকে যখন চিত্রের দেশকালবন্ধনের মধ্যে চিত্রী বিধৃত করেন, তখন সেই সমগ্রের অনুপ্রাণনায় প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ একটি বিশেষ সামঞ্জস্য ও সার্থকতা লাভ করে। অধিকাংশ শ্রেষ্ঠ ভারতীয় মুর্ত্তি ও চিত্রই এই প্রণালীতে গঠিত বা অঙ্কিত হইয়াছে। যে বিরহী তাঁহার প্রণয়িনীর প্রতিকৃতি তাঁহার হৃদয় মন্থন করিয়া, তাহারি বর্ণে অঙ্কিত করিতেন, তাঁহার হৃদয়পটে প্রণয়িনীর সমগ্র রূপটি প্রেমরসে অভিষিক্ত হইয়া ফুটিয়া উঠিত, তিনি তাহাকেই রূপ দিয়া বাহিরে প্রকাশ করিতে চেষ্টা করিতেন। সেইজন্য অনেক সময় দেখা যায় যে অন্য সকলে সুন্দর বলিলেও চিত্রীর মনে ক্ষোভ রহিয়া যাইত যে অন্তরে তিনি যে লাবণ্য প্রত্যক্ষ করিয়াছেন বাহিরের রেখা বা বর্ণবিন্যাসে তাহা তিনি ফুটাইয়া তুলিতে পারিলেন না—

“যদ্‌যৎ সাধু ন চিত্রে স্যাৎ ক্রিয়তে তৎ তদন্যথা।
তথাপি তস্যা লাবণ্যং রেখয়া কিঞ্চিদন্বিতম্॥”

 কোন মানুষকে আঁকিতে গেলে কেবলমাত্র তাহার দেহকে