পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
৪১

যেখানে সর্পভ্রম ঘটিত, বা মরীচিকায় জলভ্রম হইত, সেখানেও একটি মিথ্যা সর্প বা মিথ্যা জল বাহিরে সৃষ্ট হইত বলিয়া অঙ্গীকার করা হইয়াছে। সেই বহিঃসৃষ্ট মিথ্যা বিষয়ের সহিত ইন্দ্রিয়জ জ্ঞান জন্মিত। বোধ হয় এই জন্যই চিত্রানুকৃতির সময়ও শিল্পীদিগের নিকট এই দাবী করা হইত যে, যাহা চক্ষুতে দেখা যায় তাহারি অনুকৃতি যখন চিত্রীর উদ্দেশ্য, তখন চিত্রের সমস্ত বস্তুকেই চিত্রীকে অঙ্কিত করিতে হইবে। কোন একটি মূর্ত্তির কেবলমাত্র মাথা দেখাইলে সেই মাথা হইতে অবয়বের সম্বন্ধে আমাদের যে জ্ঞান হয়, তাহা দর্শন নহে—অনুমান। এই জন্যই শ্রীকুমার শিল্পরত্নে লিখিয়াছেন—“সর্ব্বাঙ্গদৃশ্যকরণং চিত্রমিত্যভিধীয়তে", অর্থাৎ সমস্ত অঙ্গকেই দৃশ্য করিতে হইবে। সেই জন্যই স্থানবিনিবেশসূচক perspective-এর জ্ঞান থাকিলেও আমাদের দেশের শিল্পীরা দূরত্বজ্ঞাপন করার যে সমস্ত কৌশল আছে সে সমস্ত কৌশল অনেকসময় চিত্রে ও ভাস্কর্যে ব্যবহার করিতেন না,—এবং পৃথক্ পৃথক্‌ চিত্রফলকে একই plane-এ দূরের এবং নিকটের বস্তু পৃথক্‌ পৃথক্ করিয়া দেখাইতেন। Perspective-এর যে তাঁহাদের জ্ঞান ছিল তাহা চিত্রসম্বন্ধীয় অনেক বর্ণনা এবং অজন্তার কোন কোন চিত্র এবং চিত্রশাস্ত্র হইতে প্রমাণ করা যায়। চিত্রসূত্রে লিখিত আছে—“সুপ্তং চ চেতনাযুক্তং মৃতং চৈতন্যবর্জ্জিতম্। নিম্নোন্নতবিভাগঞ্চ যঃ করোতি স চিত্রবিৎ।” অর্থাৎ যে চিত্রী নিদ্রিতকে নিদ্রিতের ন্যায় আঁকিতে পারে, চেতনাবানকে সচেতনের