পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
৫৭

করিয়া অন্য জাতীয় ভাবের মধ্য দিয়া আপনাকে প্রকাশ করিতে পারে। কাম, ক্রোধ, ভয়, হর্ষ, ধ্যানানন্দ, সমাধির আনন্দ, যোগানন্দ প্রভৃতি বিবিধ ভাবের যে কোনটির মধ্য দিয়া কোনও ব্যক্তি কি করিয়া তাহার ব্যক্তিত্বকে বিসর্জ্জন দিয়া আপনাকে প্রকাশ করিতে পারে এইদিকেই ছিল তাঁহাদের লক্ষ্য। সীমাবদ্ধ ব্যক্তিত্বেই মৃত্যু ও ব্যক্তিত্বের সীমাকে লঙ্ঘন করাতেই মুক্তি। এমন কি যে সমস্ত হর্ষ শোক ভয়াদি লৌকিক ভাব মানুষের ব্যক্তিত্বের সহিত বা তাহার পৃথক সীমাবদ্ধ সত্তার সহিত নিরন্তর জড়িত রহিয়াছে, সেগুলিকে যদি ব্যক্তিত্ববন্ধনের বাহিরে লইয়া গিয়া তাহাদের ব্যক্তিত্বনিরপেক্ষ সামান্য রূপের মধ্যে অনুভব করা যায়, তাহা হইলে সেই উপায়েই মুক্তি সমীপস্থ হয় একথা আমাদের দেশে কোন কোন বিশিষ্ট দর্শনশাস্ত্রে অতি যত্নের সহিত প্রমাণ করার চেষ্টা হইয়াছে। রসশাস্ত্রের সর্ব্বশ্রেষ্ঠ মনীষী অভিনবগুপ্ত ধ্বন্যালোকে বলিয়াছেন যে রসানুভবের প্রধান কারণই এই যে রসানুভবের সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তিত্বের আবরণ ভাঙ্গিয়া যায় এবং ব্যক্তিত্বের অবরণ ভাঙ্গিয়া গেলেই প্রত্যেক মানুষের মধ্যে যে সর্ব্বসাধারণ অনুভবরস তাহাদের আত্মস্বরূপ হইয়া রহিয়াছে, তাহার সহিত এক হইয়া যায়; যিনি রসস্রষ্টা তাঁহার হৃদয়ের সহিত সমস্ত আস্বাদয়িতার হৃদয় যুগপৎ এক হইয়া যায়, এইটিকেই বলা যায় রসের সাধারণীকরণ। শৈবদর্শনের নানাস্থানে ও নানাতন্ত্রে লিখিত আছে যে, যে কোন রসের মধ্যেই যদি কেহ আত্মহারা হইয়া ডুবিয়া যায়, ব্যক্তিত্বহারা হইয়া সেই