পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬২
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

 তাহার রূপ কি রকম? শৈবালাচ্ছন্ন ভায়লেট পুঞ্জের ন্যায়, এবং আকাশে যখন কেবল একটি মাত্র তারা প্রকাশ পায় সেই তারাটির মত। এই উপমার তাৎপর্য এইখানে যে শৈবালাচ্ছন্ন ভায়লেট যেমন দৃষ্টি আকর্ষণ করে, উজ্জ্বল সন্ধ্যাতারা যেমন দৃষ্টি আকর্ষণ করে তেমনি তাহার রূপ তাহার নিঃসঙ্গতার মধ্য দিয়া তাহার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করিত। ভারতীয় কবি হইলে বলিতেন, শৈবালদল বেষ্টিত হইয়াও পুষ্প যেমন তাহার লাবণ্যকে অধিকতর প্রকাশ করে, তেমনি তাহার রূপ জীর্ণবাসের মধ্য দিয়া দেদীপ্যমান হইয়াছিল। উপমা দিতে গেলেই যথাযোগ্য অবয়ব অবয়বে উপমা দিয়া ভারতীয়েরা সমগ্রের উপমা ঘটান, কিন্তু অবয়ব বর্জন করিয়া কেবলমাত্র একটি সমগ্র সংঘটনের সহিত আর একটির উপমা দিতে তাঁহারা অভ্যস্ত নন। কালিদাসের ঋতুসংহার বা মেঘদূত পড়িলে দেখা যায় যে মানুষের মধ্যেও যেমন জীবনলীলা চলিয়াছে সমগ্র প্রকৃতির মধ্যেও তেমনি জীবনলীলা চলিয়াছে। একস্থানে যেমন হর্ষ শোক আবেগ ভয়, অন্যস্থানেও সেইরূপই। এইজন্যই ভারতীয় শিল্পেও দেখা যায় যে একদিকে যেমন মানুষের অবয়ব সংঘটনের মধ্যে ও অবয়ব সন্নিবেশের মধ্যে সর্ব্বসাধারণ প্রাণলীলা দেখাইতে গেলে অবয়বের অতিস্ফুটতা করা সম্ভব নয়, অপরদিকে তেমনি মানুষের সঙ্গে সঙ্গে পশুপক্ষী বৃক্ষাদির সন্নিবেশ একরূপ অপরিহার্য বলিয়া পরিগণিত হইত—শুধু তাহাই নহে প্রকৃত চিত্রের সহিত প্রাণী, উদ্ভিদ প্রভৃতির একটি একতানযোগ রাখিবার জন্য সর্ব্বদাই