পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪ বর্ষ, অষ্টম সংখ্যা । দেশের শিল্প-বিদ্যাও তাদের দেশে এবং অন্তান্ত সকল দেশে গেছে । অনেকে মনে করেন পূজনীয় অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিত্রের আদর্শ জাপান চিত্র হইতে গৃহীত—অজস্তার ছবি দেখলে কিন্তু এ ভ্রম একেবারেই দূর হয়ে যায়। তার চিত্র – এমন কি সেই চিত্রের প্রাণ পৰ্য্যস্ত যে ভারতবর্ষীয় তাহ অজস্তার চিত্র দেখলে আর সন্দেহ থাকে না । ইংরাজের নয় নম্বব গুছাকেই অন্তান্ত সকল গুহার চেয়ে বেশী প্রাচীন বলেন, —কেন জানি না । তারা বোধ হয়, গুহার অনেক গুলি ছবিতে অপকৃষ্ট অসভ্যের আকৃতি দেখতে পান বলে এরূপ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন । কিন্তু, সেই গুহাটাতেই আবার আমরা "বুদ্ধদেবের প্রচার প্রভৃতি উৎকৃষ্ট ছবিও দেখেছি । তবে, থামের গায়ে খোদা যে একটা লেখা আছে সেইটে ধরে যদি—তারা কিছু আবিষ্কার করে থাকেন ত’ সে কথা স্বতন্ত্ৰ ! আমরা অজস্তার ছবিগুলিতে মাত্র দু-এক যায়গায় পালি অক্ষরেরর মত লেখা দেখেছিলুম। আর পাথরের দেওয়ালের উপর খোদা লেখা ও দু একটা গুহাতে পেয়েছি । সেগুলিতে ঐতিহাসিকদের জান্‌বার বিষয় অনেক থাকৃতে পারে। আমরা এক, নম্বর, দুই, নয়, দশ, ষোল, সতের, উনিশ প্রভৃতি নম্বরের কতকগুলি গুহ ভিন্ন, আটাশটা গুহার মধ্যে অন্য কোনটাতে বড় একটা ছবি দেখতে পাইনি । পথ না থাকায় একটা গুছাতে তো একেবারে যাওয়াই গেল না । অল্পসংখ্যক বৌদ্ধ ও প্রাচীন মোগল চিত্রশিল্প । ❖©ፃ কতকগুলি গুহ অসম্পূর্ণ ভাবে পড়ে আছে। কোনটার কেবল বারান্দাটুকু খোদা মাত্র হয়েছে, কোনটা কেবলমাত্র খুদতে আরম্ভ করেছিল ; পাহাড়ের গায়ে বাটালীর দাগ এখনও বেশ পরিষ্কার ফুটে আছে! দেখলে মনে হয় যেন এইমাত্র শিল্পীরা বসে বসে কাট্‌ছিল, পরিশ্রাত্ত হয়ে যে যার বাড়ী গেছে । কতকগুলিতে পূৰ্ব্বে ছবি ছিল –কিম্বা আঁকা হচ্ছিল— কালে মাটী চাপা পড়ে সেগুলি একেবারে অদৃশু হয়েছে । অজস্তার বেশীর ভাগ ছবি একেবারে লুপ্ত ও নষ্ট হয়ে গেলেও এখনও তাকে অক্ষয় ভাণ্ডার বলা চলে । যে সব ছবি এখনও বর্তমান আছে সে গুলির আমরা কেউ যদি আজীবন ধবে প্রতিলিপি ( copy ) করি, তবে, এ জীবনে সেগুলি শেষ করে উঠতে পারি কিনা সন্দেহ ! আমি এইবার অজস্তার বিশেষ বিশেষ কয়েকটা ছবির বিষয় কিছু বো'লে আমার প্রবন্ধ শেষ ক’র্ব। প্রথম নম্বর গুহায় আমরা একটা বিশাল, সৌম্য, ও সুন্দর কাস্তি বিশিষ্ট বুদ্ধদেবের ছবি গুহাটীকে উজ্জল ক’রে রেখেছে দেখতে পাই । সেখানি বুদ্ধদেবের গৃহত্যাগের চিত্ৰ ব’লে মনে হয়। সেই ছবি থানিতে চিত্র-শিল্লির বাস্তবিকই তাদের মহৎ ও উদার অন্তঃকরণের পরিচয় দিয়ে গেছেন ; কেন না, তাদের মন সেরূপ উচ্চ না হ’লে ছবিতে তেমন বিশ্বপ্রেমে বিহবল ও আত্মহারা ভাব কখনই দেখাতে পারতেন না। সাধারণতঃ কবিদের লেখায়, আর চিত্রকরের চিত্রে র্তাদের চিত্তের ভাব প্রতিফলিত হ’তে দেখা