পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/১২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&& о তা বটে এখনতো কোন ট্রেণ নেই ; তাহলে যোগেশ কি করা যায় বলে দেখি ?” যোগেশ অনুমানে ব্যাপারটা বুঝিয়া ফেলিল, চট করিয়া তাহার মাথায় বুদ্ধি খেলিয়া গেল, হেমেন্দ্রকে একটু আড়ালে লইয়া গিয়া জিজ্ঞাসা করিল ‘ব্যাপারটা কি বলে দেখি ? শ্বশুরবাড়ি গেলেন কেন ?” হেমেন্দ্রের মুখ আরক্ত হইয়া উঠিল কিন্তু সব কথা খুলিয়া না বলিয়া কেবল মাত্র উত্তর করিল “না।” “বাড়িতে আর বনবেন তা আমি আগেই জানতুম । তা কোন জায়গাটায় যাওয়া ঠিক হয়েছে ?” হেমেন্দ্র মুখ নীচু করিয়া আস্তে আস্তে উত্তর করিল “এখনও কিছুই ঠিক করিনি।” “ঠিক না করেই টিকিট কিনবে নাকি ? সঙ্গে কে আছে ? জিনিষ পত্র কই ?” একি পরিহাস ! হেমেন্দ্রের লোকজন জিনিষ পত্র । তার কি আছে ? কে আছে ? মৃদুহাসিয়া বলিল “সঙ্গে কে থাকবে ? যোগেশ যখন বাড়ি থেকে এসেছিলুম সঙ্গে কে এসেছিল ? আর কিছুই তো অনিনি, যেমন এসেছিলুম তেমনিই যাব । শুধু যে বোঝা ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছেন সেইটেই বইতে হবে ।”

  • এর নাম পশ্চিম যাওয়া ! পশ্চিমে গিয়ে কি করবে ? চলবে কেমন করে ?”

হেমেন্দ্রের আরক্তমুখ বিবর্ণ হইয়া আসিল, সম্মুখে দিগন্ত প্রসারী সংসার সমুদ্র, সে গলায় কলসী বাধিয় তাহাতে ঝাপ দিয়া পড়িতে আসিয়াছে, সাতারও জানেন, তথাপি গৰ্ব্বের সহিত কহিল “কোথাও একটা চাকরী বাকরী চেষ্টা করব, ভিক্ষের ভাত আর থাবো না । যোগেশ আমার যথেষ্ট শিক্ষা হয়েচে ।”— ভারতী । অগ্রহায়ণ, ১৩ ১৭ যোগেশ মৃদু মৃদ্ধ হাসিতেছিল ! বলিল “ভিক্ষে, সবিতে তোমার। খুড়র ভীমরথি হয়েচে বলে দেশের আইন আদালত মৃদ্ধ কি উঠে গেল ? মাগী আদালতে প্রমাণ করুক না কেমন সে বিনোদের স্ত্রী।” হেমেন্দ্রের চোখের সন্মুখ হইতে যেন একখান কাল পর্দা কে সরাইয়া দল। সত্যিতে। মুখ বিনোদ কুমাবের মতন সেও অভিমানে দেশ ছাড়া হইবে নাকি ? তাহাতে ক্ষতিই ব৷ কাহার ? সাগ্রহে বলিয়া উঠিল “কিন্তু শ্বশুর তো আমাদের কিছুমাত্র সাহায্য কৰ্ব্বেন আমার তো কিছুই নেই—“ যোগেশ বন্ধুর পিট চাপড়াইয় তাহাকে “কিছু ভেবন সব আমি ঠিক করে ফেলব। এখন তবে কোথায় থাকবে ! ফরেস ডাঙ্গায় আমার এক শালীর বাড়ি আছে চলে। বলত তোমাদের বরঞ্চ সেইখানেই নিয়ে যাই । তারা গেছে কাশীবাস করতে,—বাড়িখানা ভাড়াও হয়নি খালি পড়ে রয়েচে ।” একটু পরেই একখানা প্যাসেঞ্জার গাড়ি ছাড়িবে—যোগেশ গিয়া শাস্তিকে বলিল,“বৌদি এখানে দাড়িয়ে কেন গাড়িতে এসে বসুন, চারিদিকে ভদ্র লোকের ভিড় —” শান্তি দ্বিরুক্তি মাত্র না করিয়া যোগেশের সহিত আসিল ! হেমেন্দ্র দেখিয়া বিস্ময়ের সহিত ভাবিল যোগেশ নাজানি কিউপায়েই তাহার মন ফিরাইয়াছে ! ট্রেন ছাড়িয়া দিলে একে একে জনকোলাহলময়ী নগরীর দৃপ্ত চক্ষের সন্মুখ হইতে সরিয়া গেলে পব শান্তি যখন মুখ ফিরাইল, হেমেন্দ্ৰ দেখিল একরাত্রির ভিতরে তাহাকে উৎসাহিত কবিয়া কহিল