পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/১৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩১শ বর্ষ, নবম সংখ্যা । যোগেন্দ্রবাবুর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত সমিতি হইতে এতদুদ্দেশ্রে ইয়োরোপ জাপানে মধ্যে মধ্যে ছাত্র প্রেরিত হইয়া থাকে, সম্প্রতি বেঙ্গল শিল্পবিদ্যালয় হইতেও সাতজন যুবক বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষা পাইবার জন্ত আমেরিকায় গিয়াছেন ; ইহা অতিশয় সুলক্ষণ সন্দেহ নাই। কিন্তু তথাপি আমাদের অভাবের পক্ষে এই আয়োজন একদিকে সামান্ত —অষ্টদিকে আবার যাহাবা বিদেশ হইতে ইংরাজের স্বদেশ-প্রেম। ፃቋኔ শিথিয় দেশে ফিল্লিতেছেন তাহারাও সকলে দেশসেবাই ব্রতরূপে গ্রহণ করিতেছেন না ! বস্তুতঃ যেদিন আমরা দেখিব বন্ধের ফাগুসন কলেজের ব্রতধারী শিক্ষকগণের স্তায় বঙ্গদেশেও বিলাত প্রত্যাগত শিক্ষকগণ অনন্য চিন্তাহীনভাবে শিক্ষাদানে নিযুক্ত সেইদিন বুঝিব আমাদের দ্যাসানেল কলেজ বা শিল্প বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সার্থক । ঐবিনয়কুমার সরকার। ইংরাজের স্বদেশ-প্রেম। মোগল পীতসাহদিগের রাজত্বের অবসানকালে ভারতের চতুর্দিকে ঘোর অরাজকতা উপস্থিত হইয়াছিল । দিল্লির সম্রাট তখন নামে সম্রাট বলিয়া পরিচিত হইতেন । র্তাহার হস্ত হইতে শাসন-বল্লা বিচু্যত হইয়াছিল। গৃহস্বামীর অনুপস্থিতে অথবা কাৰ্য্যকুশলতার অভাবে গৃহের সর্বত্রই যেরূপ বিশৃঙ্খলা পরিদৃষ্ট হয়, মোগল পাতসাহদিগের অকৰ্ম্মণ্যতায়, দৌৰ্ব্বল্যে ভারতবর্ষের রাজ্যনিচয়ের তদ্রুপ অবস্থা হইয়াছিল। তখন সকলেই স্ব স্ব প্রাধান্ত স্থাপনে সচেষ্ট হইয়াছিলেন, কাজেই গৃহ-বিবাদগ্নি ভারতবর্ষের এক প্রাস্ত হইতে অপর প্রাস্ত পর্য্যস্ত প্রজ্জ্বলিত হইয়াছিল। এই সময়ে বঙ্গদেশ ইংরাজবণিকদলের ক্রমেই করতলগত হইতেছিল । তথায় ইংরাজের প্রভুত্ব লইয়া বিবাদ করিবার আর কেহই ছিল না । উত্তর-পশ্চিমের অবস্থাও প্রায় তথৈবচ হইয়াছিল। দিল্লির সম্রাট কখন মুসলমান রাজদ্রোহীর, কখন মহারাষ্ট্রীয় নরপতির হস্তে ক্রীড়ণক স্বরূপ বিরাজ করিতেছিলেন । দীক্ষিণাত্যে আধিপত্য বিস্তার মানলে কেবল যে ইংরাঞ্জ ও ফরাসী রণাঙ্গণে অবতীর্ণ হইয়াছিলেন, তাছা নহে ; দেশীয় রাজন্তবর্গও স্বাধীনভাবে দাক্ষিণাত্য গ্রাসের চেষ্টা করিতে বিরত হন নাই। পঞ্চাবে শিখের বল প্রবল থাকিলেও অরাজকতার অভাব ছিল না । ভারতবর্ষের এবংবিধ অবস্থায় য়ুরোপ হইতে দলে দলে শ্বেতাঙ্গ আগমন করিতেন । ভারত রত্ন প্রস্থ বলিয়া চিরকাল কিংবদন্তী প্রচলিত অাছে। এই সময়ে ভারতবর্ষ হইতে রত্নাহরণ করা সুবিধাজনক, ইহা অনেকেই অনুমান করিয়া –স্বদেশে উপেক্ষিত অবস্থায়, দৈন্যদশায়, অনাহারে মৃত্যুমুখে পতিত হওয়া অপেক্ষা ভারতবর্ষে ভাগ্য পরীক্ষার্থ আগমন করা শতগুণে শ্রেয়ঃ ভাবিয়া-কোনরূপে ভারতে পদার্পণ করিতে প্রয়াসী হইতেন। বলা বাহুল্য, ইহাদিগের অধিকাংশেরই আশা পূর্ণ হইত।