পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/১৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१२ * প্রাথমিক শিক্ষা প্রণালী ও তাহার উদ্দেশু, এবং শিক্ষা বিজ্ঞানে ব্যুৎপন্ন মনীষিগণের অভিমত পর্য্যালোচনা করিয়া দেখা গেল যে, আবহমানকাল হইতে বাস্তব কৰ্ম্মের সহিত শিক্ষার সম্বন্ধ স্থাপিত হইয়াছে এবং এই সম্বন্ধ স্থাপনের জন্ত বহুবিধ চেষ্টাও হইয়াছে। শিক্ষা দেশ কাল ভেদে বরাবরই সমাজের উপযোগী ছিল। কালক্রমে সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন নিবন্ধন শিক্ষা প্রণালীরও পরিবর্তন আবশুক হইয়া উঠিয়ছে। দ্বিশতাব্দী পূর্বের সমাজ ও আধুনিক সমাজ এক নহে, ইহাদের মধ্যে অনেক পার্থক্য জন্মি য়াছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমাজেরও বহু পরিবর্তন সংঘটিত হইয়াছে । এখন আর দ্রব্য বিনিময়ে ক্রয় বিক্রয় চলে না ; শিল্প ও বাণিজ্যের অনেক উন্নতি সাধিত হইয়াছে এবং বহুবিধ শিল্পব্যবসায়েরও স্বষ্টি হইয়াছে। নানারূপ কলকারখানার স্বষ্টি হওয়ায় আজকাল অতি অল্প সময়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে বহুবিধ দ্রব্য উৎপন্ন হইতেছে এবং পৃথিবীর এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্তে যাতায়াতেরও বিশেষ সুবিধা হইয়াছে—এক্ষণে এক মাসের পথ এক দিবসেই যাওয়া যায়, স্থানের দূরত্ব আর পুৰ্ব্বের স্থায় সময়াপহারক 'নহে। বিজ্ঞান আধুনিক সমাজে এক নবযুগ আনয়ন করিয়াছে ; আজকাল একস্থানে বসিয়া নিমেষমধ্যে সমস্ত পৃথিবীর খবর পাওয়া যায়। রেলগাড়ী, ষ্টীমার ও টেলিগ্রাফ স্থান ও সময়ের সঙ্কীর্ণতা দূর করিয়া সমগ্র পৃথিবীকে একস্থত্রে আবদ্ধ করিয়াছে । এই সকল পরিবর্তননিবন্ধন এক্ষণে শিল্প ও বাণিজ্য স্বাভাবিক বুদ্ধির দ্বার চালিত না হইয়। ভারতী । পৌষ, ১৩১৭ বৈজ্ঞানিক প্রণালীতে চালিত হইতেছে। ইদানীং এমন অনেক নুতন নুতন শিল্প ও ব্যবসায়ের স্বষ্টি হইয়াছে যাহা বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ব্যতিরেকে পরিচালিত করা একেবারে অসম্ভব। সুতরাং ব্যবসাবাণিজ্য করিতে হইলে আজকাল বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের বিশেষ প্রয়োজন। অতএব আমাদের দেশেও শিক্ষাকে কাৰ্য্যের উপযোগী করিতে হইলে এখন আর অতীতকালের শিক্ষা প্রণালী বজায় রাখিলে চলিবে না ; সমাজের নুতন নুতন আবগুকের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়৷ তদুপযোগী শিক্ষাপ্রণালীরও প্রবর্তন করতে হইবে । সুখের বিষয় দেশের লোকে অল্পবিস্তর পরিমাণে ইহা বুঝিয়াছেন। শিল্পশিক্ষা ব্যতিরেকে এক্ষণে আর ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নতি সাধন সম্ভবপর নহে, ইহা দেথিয়া অনেকেই শিল্পশিক্ষার জন্ত উদগ্রীব হইয়। উঠিয়াছেন । সংসারে প্রবেশ করিয়া বাণক বালিকাদিগকে যে কৰ্ম্মে নিযুক্ত হইতে হইবে তাহাদিগকে তদুপযোগী শিক্ষা প্রদান করিবার জন্ত সাধারণের দিন দিন অধিকতর আtওহি প্রকাশ পাইতেছে ; ব্যবসায় বাণিজ্যের উদ্যোগ এবং শিল্পবিদ্যালয়াদির প্রতিষ্ঠারদিকে ও লক্ষ্য পড়িয়াছে। তথাপি এখনও আমাদের অভাব বিস্তর । কৰ্ম্মক্ষেত্রের সকল রূপ বিভাগে প্রবেশ পথ যতদিন না উন্মুক্ত হয় ততদিন এই আগ্রহের অমুরূপ ফললাভে আমরা বঞ্চিত । এপক্ষে আর একটি প্রধান অন্তরায় শিক্ষকের অভাব। জ্ঞান প্রচারের দিকে আমাদের যেমন লক্ষ্য পড়িয়াছে সেই সঙ্গে কাৰ্য্যকারী শিক্ষার সকল বিভাগেই শিক্ষক প্রস্তুতের চেষ্টারও আবশুক ।