পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/২৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

eoশ বর্ষ, নবম সংখ্যা । আলোকহীন একটা গহবরের মধ্যে যেন নামিয়া পড়িয়াছি, আমার চারিধারে অসংখ্য দানব বিভীষিকার স্বষ্টি করিয়া তুলিয়াছে । হয়ত বা দেখিব সেই অফুট অন্ধকারে আমার শিরোহীন দেহটা পড়িয়া আছে—আর কবন্ধের চারিধারে ভূত প্রেতের উপদ্রব বাধিয়া গিয়াছে ! যেন এক বিপুল ঝড়ের জাঘাতে পৃথিবীর এক কোণের পর্দা সরিয়া গিয়াছে, আর অসংখ্য দানবের দল পৃথিবীর মধ্যে আসিয়া পড়িয়াছে ! চারিধারে নরকঙ্কালের পর্বত, তাহারি নিম্নে রক্তের নদী বছিয়া চলিয়াছে ! মাথার উপর আকাশে আলো নাই—নক্ষত্রগুলা শুধু অগ্নিময় পার্থীর মত উড়িয় বেড়াইতেছে ! আমার পূৰ্ব্বে ফাসিকাঠে যাহার প্রাণ দিয়াছে, তাহার অtমার জন্ত দল বাধিয়া প্রতীক্ষা করিতেছে- তাদের মুৰ্ত্তিগুলা যেন আমি চোখে দেখিতে পাইতেছি—সব রক্তহীন শীর্ণ দেহ, কোটরগত চক্ষু, শুকমুখ, কি ভীষণ । অস্পষ্ট আলো-আঁধারে দাড়াইয়া অতিমুদুকণ্ঠে তাহার কথা কহিতেছে—মুখে কাহারে এতটুকু হাসির রেখা নাই—কি এক আতঙ্ক —কি সে উদ্বেগ—তাদের অস্তরে বাহিরে একটা বিরাট দাগ পড়িয়া গিয়াছে । কোনদিকে আর কিছু দেখা যায় না—শুধু ভিলা হোটেলের ঐ নিৰ্ম্মম ঘড়িটা—ফাসিকাঠে চড়িবার সময় সে তার রক্ষ্ম মূৰ্ত্তি রক্ত চক্ষু লইয়া অচঞ্চল দৃষ্টিতে বিদায় দিয়াছিল! জগতে কোথাও কিছু নাই—এতটুকু সহায়ভূতি, এতটুকু করুণা—কিছু না ! এমন নানা কথা মনের মধ্যে আনাগোনা করিতেছে । এক দও নিস্কৃতি নাই ! চয়ন—বনী । 特も3 হায়—কি এ মৃত্যু ? কে সে ? আত্মাটার সহিত তার এত বিরোধ কেন ? এক আঘাতে সে যখন দেহটাকে ধূলিসাৎ করিয়া দেয়, তখন মনের এই অনুভূতি, এই প্রেম মেহ, দয়া মারা এমন সৰ্ব্বব্যাপী ষে চিত্ত— এসব সে কোথায় উড়াইয় দেয় ? পৃথিবী— কঠিন পৃথিবীর কি এতটুকু মায়া—এমন শক্তি নাই যে এই মৃত্যুটাকেও জয় করিয়া স্বহস্তে সে তার গঠিত জীবনটাকে রক্ষা করে ? ভগবান, এ কি বিচিত্র তোমার স্বাষ্টলীলা ! কি নিষ্ঠুর এ রহস্য ! নিৰ্ম্মম কৌতুক ! Vలిసె একটু নিদ্রার জন্ত কাতর হইয়া শয্যার আশ্রয় গ্রহণ করিলাম । মাথার মধ্যে রক্তের স্রোত বহিস্থ গেল । জীবনে ইহাই আমার শেষ নিদ্ৰা ! স্বপ্ন দেখিলাম ! 爱 যেন নিস্তব্ধ গভীর রাত্রি ? অামার পাঠাগারে দুইটি বন্ধুর সহিত বসিয়াছিলাম। পাশ্বের কক্ষে স্ত্রী নিদ্রিতা—কগু মেরি তাহারই বুকের কাছে ! আমরা মৃদুস্বরে কথা কহিতেছিলাম— কেহ যেন না ভয় পায় ! সহসা একটা শব্দ শুনিয়া চমকিয়া উঠিলাম ! তখনি সন্ধানের জন্ত চলিলাম ! নিশ্চয় চোর আসিয়াছে ! চারিধারে সন্ধান করিলাম ! কেহ কোথা নাই—জনপ্রাণীর চিহ্নও না ! চিমনির পাশে কি ও ? কে ? দেখি, এক নারী—কেশগুচ্ছ রুক্ষ্ম, মুক্ত, মুখের চারিধারে উড়িয়া পড়িয়াছে—মুখে একটা পরুষভাব । সে চক্ষু মুদিয়াছিল ! আমি কহিলাম, "কে তুই ?”