পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, সপ্তম সংখ্যা । নীরদ - একটু ভাবিয়া বলিল “তাতে৷ জানি না। হয় তো খুব শীঘ্র ও কতে পারে আর নয় তো অনেক দেরিও হয়ে যেতে পারে । কি জানি যোগেন কি হবে !” নীরদের স্বর কম্পিত হইতেছিল ! যোগেন্দ্র জানিত ভাবুক লোকের কথা বার্তা চাল চলন সাধারণ লোকের সঙ্গে ঠিক খাপ খায় না । সে কহিল “তোমার আদেশ কবে অগ্রাহ করেছি। কিন্তু একটা কথা—এই বৎসবৃন্দ নিয়ে দিন রাত গোষ্ঠলীলা করতে করতে যে সময় প্রাণটা পরিত্রাহি ডাক ছাড়বে সেই সময়টিতেই যে ঠিক মানভঞ্জনের পালা গাইতে খুব ভাল লাগবে এমন তো ভরসা করা যায় না। তাই ভাবচি ওপরের ঘরগুলো ওঁদের খাসমহল করে দিয়ে তোমার এই নারীবর্জিত গৃহে আস্তান গেড়ে একবার জিরিয়ে নেওয়া যাবে, নৈলে ত আর পারা शांग्न न ।” নীরদ তীক্ষ শ্লেষের সচিত ব্যঙ্গ করিল, “যে খায় উওভি পস্তায় !—আর যো নেছি থtয়া—উওভি পস্তায় ! তা ত দেখতে পাচ্চি মশায় ! এখন বল দেখি কোথায় যাচ্চ, কোন দেশে ?” নীরদ হঠাৎ ঘামিয়া উঠিল, তাহার বুকের মধ্যে এত জোরে জোরে হৃদপিণ্ডের ক্রিয়া আরম্ভ হইয়াছিল যে তাহার নিশ্বাস আটকাইয়া পড়িবার মত হইয়া আসিল । মাটির দিকে চাহিয়া রুদ্ধশ্বাসে মৃদু স্বরে সে উত্তর করিল, “মাপ করে ভাই, আজ আমায় কিছু জিজ্ঞাসা করে না ।” যোগেন্দ্র মনে মনে বিস্মিত হইল কিন্তু বাহিরে তাহ প্রকাশ না করিয়া কহিল "এত পোষ্যপুত্র। (to R লুকোচুরি কিসের বলে তো শুনি ? তা যাও যাও যদি সঙ্গিনী-সংগ্রহের ইচ্ছা হয়ে থাকে তো বলে যাও আমি মণিকে দিয়ে বরণডাল৷ সাজিয়ে রাখি। ও কি চমকালে যে ? ঠিক ধরেছি নাকি ? দেখ আজ তোমায় বলি—শাস্তিকে ভালবেসেও তুমি যখন তাকে পাবার চেষ্টা করলে না তখনি আমার একটু সন্দেহ হয়েছিল যে তোমার আদ্যলীলার কোথাও কোন গলদ আছে । কে সে ভাগ্যবতী শুনি এতদিন পরে যার কপাল ফিরলে ? নিশ্চয়ই কোন ব্রাহ্ম মেয়ে হবে নৈলে কে আর এখনও আইবুড় বসে আছে । নীরদ নীরদ ও কি ? রাগ কল্লে?” যোগেন্দ্রনাথ সহসা লজ্জাতাড়িত আবেগে এই কথা বলিয়া তাহার হাত ধরিবার জন্ত নীরদের দিকে দুই হাত বাড়াইয়া দিল । কিন্তু বন্ধু তাছার প্রতি কোন লক্ষ্য না করিয়া বেত্রাছতের মত চমকিয়া দ্রুত পদে পাশের ঘরে চলিয়া গেল । সেথায় স্তব্ধভাবে জানালার নিকট দাড়াইয়া বাহিরের অন্ধকার দৃষ্ঠের দিকে সে চাহিয়া রহিল । যদি তাহার বন্ধু যোগেন্দ্রনাথ তখন হতবুদ্ধি না হইয়। গিয়া উঠিয়া আসিয়া একটা আলো হাতে করিয়া তাহার সম্মুখে দাড়াইত, তাহা হইলে তাহার বিস্ময় সীমা অতিক্রম করিয়া উঠিত কাবণ সে মুখে লজ্জার যে নিবিড় ছায়। ফুটিয়া উঠিয়াছিল তাহাতে অমার্জনীয় অপরাধেরই চিত্ন প্রকাশ পাইতেছিল। যোগেন্দ্র তাহার বন্ধুকে ঠিক দেবতার মত পবিত্র বলিয়া জানে সে যখন জানিবে যে বাস্তবিক সে তাঁহা নয় ! ক্রমে অন্ধকার কাটিয়া গিয়া কুয়াশা