পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/২৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, বনম সংখ্যা । অঞ্চলে সরস্বতী পূজার দিন যেমন দোয়াত পরিষ্কার করা হয় এবং স্বদেশী নলের কলম ব্যবহার করা হয় এ অঞ্চলে দেওয়ালীব দিন সেইরূপ পরিষ্কার দোয়াত, নলের কলম, স্বদেশী কালী, এবং জয়পুরী কাগজ ব্যবহার করা হয়। ঐ দিন যেন হালখাতার কায আরম্ভ হয়, ষ্টেটের ভিন্ন ভিন্ন অফিধেও ঐ দিন হইতে নূতন জিনিস ব্যবহৃত হইয়া থাকে। রাণী দেওয়াণীর দিন রাত্রিতে খুব সমারোহ। আলোক মালায় অমাবস্তার রাত্রি ও যেন দিনের মত উজ্জল হইয়া উঠে ৷ বিকানীর সহরে অনেক লক্ষপতির বাস ;–যদিও এরাজ্য রাজপুতানার মরুভূমিতে অবস্থিত তথাপি বিকানীরে যত ধনাঢ্য বণিকের বাস ভাবতের আর কুত্রাপি—তেমন নাই ; এই জন্ত বিকানীর ভারতের চিকাগো নামে পরিচিত । বিকানীর রাজ্যে ছয় শতের উপব লাথপতি, ইহার মধ্যে আবার কতকগুলি ক্রোরপতি,অথচ এ মরুভূমিতে কৃষি নাই বলিলেও চলে; যত কিছু ধনৈশ্বৰ্য্য সমস্তই বাহির হইতে আহরিত । যে ব্যবসাবাণিজ্যের প্রতি এতদিনে বাঙ্গালীর মনোযোগ আকৃষ্ট হইয়াছে শুদ্ধ সেই ব্যবসাতেই ইহারা লাথপতি ক্রেরপতি হইয়া দাড়াইয়াছে । ইহাদের অনেককে কলিকাতা বোম্বে প্রভৃতি বড় বড় সহরে নিঃসম্বল গিয়া ফেরিওয়ালার কায পর্য্যস্ত করিতে হইয়াছে । অনেককে প্রথম অবস্থায় স্কন্ধে কাপড়ের বস্তা লইয়া “ধুতি, সাড়ি, কাপড়” “এক টাকায় তিন খান কাপড়” বলিয়া গলিতে গলিতে ফেরি করিয়া ঘুরিতে হইয়াছে। বাণিজ্যে বাস্তবিকই লক্ষ্মীর বাস, তাই এ অঞ্চলে দেওয়ালীতে লক্ষ্মীপূজার এত জীক। বিকানীর রাবণ বধ ዓbrፃ সহরে ধনী বণিকদের মূল্যবান প্রস্তর অট্টালিকার সংখ্যা যথেষ্ট । সেদিন বোম্বের দেওয়ালী বিবরণীতে দেখিয়াছি যে তাড়িতালোক আজকাল তেলের বাতির স্থান দখল করিয়াছে । এখানে রাস্ত ঘাট এবং রাজ প্রাসাদ তাড়িতালোকে উদ্ভাসিত হইলেও পর্বোপলক্ষে তাড়িত আলোকমালার বন্দোবস্ত এখনও হয় নাই । কিন্তু তাড়িতের আলো না হইলেও সেদিন মাড়োয়ারী বণিকদের বাড়ী আলোক রশ্মিতে ঝকৃমক্‌ করিতেছিল। উপসংহারে ষ্টেটের দেওয়ালী উৎসব সম্বন্ধে দুই একটা কথা উল্লেখ করিব । রাণী দেওয়ালীর দিন সন্ধ্যাবেলায় আমরা নির্দিষ্ট সময়ে কেল্লায় সমবেত হইলাম, কিছুক্ষণ পরে মহারাজা নুতন প্রাসাদ হইতে কেল্লায় উপস্থিত হইয়া লক্ষ্মীদেীর মন্দিরে গিয়া দেবী অর্চন। করিলেন । তার পর সকলে পদব্রজে প্রাসাদের বাহিরে অপর এক মন্দিরের বীরেন্দায় গমন করিলাম। কয়েক মিনিটের মধ্যেই কয়েকজন ব্যক্তি সমাগত প্রত্যেকের হাতেই দুইটী করিয়া মশাল দিল । মশালগুলি অনেকটা আমাদের হাওয়াই বাজার মত, নলের মাথায় তেলের ছোট ছোট মশাল । প্রায় পঞ্চাশ হাত দূরে একটা সুসজ্জিত বলদ রক্ষিত হইতেছিল। আমরা সকলে মসালে আগুন লাগাইয়া মহাবাজা নিক্ষেপ করার পর একসঙ্গে মশালগুলি বলদের দিকে নিক্ষেপ করিলাম। বলাবাহুল্য মশালগুলি মাত্ৰ পাচ হাত দূরে নিক্ষিপ্ত হইল । তার পর বলদকে তথা হইতে লইয়া গেল। অনেককে জিজ্ঞাসা করিয়াও ইহার কারণ বুঝিয়া উঠিতে পারিলাম না। অনেকেই বলিল, প্রাচীন কাল