পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/২৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, দশম সংখ্যা । মধ্যে এতবড় একটা বিচ্ছেদ কখনই সুস্থভাবে স্থায়ী হতে পারে না । বিচ্ছেদ যেখানে একান্ত প্রবল সেখানে বিপ্লব না এসে তার সমন্বয় হয় না, কী রাষ্ট্ৰতন্ত্রে, কী সমাজতন্ত্রে, কী ধৰ্ম্মতন্ত্রে । আমাদেব দেশেও তাচ হল। মানুষের সাধনাক্ষেত্র থেকে জ্ঞানী যে হৃদয় পদার্থকে অত্যন্ত জোর করে একেবারে সম্পূর্ণ নিৰ্ব্বাসিত করে দিয়েছিল সেই হৃদয় অত্যস্ত জোবের সঙ্গেই অধিকার-অনধিকাবের বেড়া চুবমার করে ভেঙে বস্তার বেগে দেখতে দেখতে একেবাবে চতুর্দিক প্লাবিত করে দিলে, অনেকদিন পবে সাধনার ক্ষেত্রে মামুষের সঙ্গে মামুষের মিলন খুব ভরপুব হয়ে উঠল । এখন আবার সকলে একেবারে উণ্টে। স্বর এই ধরলে যে, হৃদয়বৃত্তিব চরিতার্থতাই মানুষেব সিদ্ধিব চরম পরিচয় । হৃদয়বৃত্তির অত্যন্ত উত্তেজনার যে সমস্ত দৈহিক ও মানসিক লক্ষণ আছে সাধনায় সেই গুলির প্রকাশই মামুষের কাছে একান্ত শ্রদ্ধালাভ করতে লাগল। এই অবস্থায় স্বভাবত মানুষ আপনার ভগবানকে ও প্রমত্ত আকাবে দেখতে লাগল। র্তার আর সমস্তকেই থৰ্ব্ব করে কেবলমাত্র তাকে হৃদয়tবেগ-চাঞ্চল্যের মধ্যেই একাত্ত করে উপলব্ধি করতে লাগল এবং সেই রকম উপলব্ধি থেকে যে একটি নিরতিশয় ভাববিহবলত জন্মায় সেইটেকেষ্ট উপাসনার পরাকাষ্ঠী বলে গণ্য করে নিলে । কিন্তু ভগবানকে এই রকম করে দেখাও র্তার সমগ্রত থেকে তাকে অবচ্ছিন্ন করে সামঞ্জস্ত । ">Q দেখা । কারণ মানুষ কেবলমাত্র হৃদয়পুঞ্জ নয়, এবং নানা প্রকার উপায়ে শরীর মনের সমস্ত শক্তিকে কেবলমাত্র হৃদয়াবেগের ধারায় প্রবাহিত করতে থাকলে কখনই সৰ্ব্বাঙ্গীণ মনুষ্যত্বের যোগে ঈশ্বরের সঙ্গে ধোগসাধন হতে পারে লা । হৃদয়াবেগকেই চরমরূপে সখন প্রাধান্ত দেওয়া হয় তখনই মানুষ এমন কথা অনায়াসে বলতে পারে যে, ভক্তিপূৰ্ব্বক মানুষ যাকেই পূজা করুকু না কেন তাতেই তার সফলতা । অর্থাৎ যেন, পূজার বিষয়টি ভক্তিকে জাগিয়ে তোলবার একটা উপায়মাত্র ; যার একটা উপায়ে ভক্তি না জন্মে তাকে অন্ত যা-হয় একটা উপায় জুগিয়ে দেওয়ায় যেন কোনো বাধা নেই । এই অবস্থায় উপলক্ষ্যট যাই হোক, ভক্তির প্রবণতা দেখলেই আমাদের মনে শ্রদ্ধার উদয় হয়—কারণ প্ৰমত্ততাকেই আমরা সিদ্ধি বলে মনে কবি । এই রকম হৃদয়াবেগের প্রমত্ততাকেই আমরা অসীমান্ত আধ্যাত্মিক শক্তির লক্ষণ বলে মনে করি তার কারণ আছে । যেখানে সামঞ্জস্ত নষ্ট হয় সেখানে শক্তিপুঞ্জ একদিকে কাং হয়ে পড়ে বলেই তার প্রবলতা চোখে পড়ে। কিন্তু সে ত একদিক থেকে চুরি করে অন্ত দিক্‌কে স্ফীত করা । যেদিক থেকে চুরি হয় সেদিক থেকে নালিশ ওঠে, তার শোধ দিতেই হয় এবং তাব শাস্তি না পেয়ে নিস্কৃতি হয় না। সমস্ত চিত্তবৃত্তিকে কেবলমাত্র হৃদয়াবেগের মধ্যে প্রতিসংহরণের চর্চায় মানুষ কখনই মনুষ্যত্বলাভ করেন এবং মনুষ্যত্বের যিনি চরম লক্ষ্য র্তীকেও লাভ করতে পারে ন! }