পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, সপ্তম সংখ্যা। “সন্ন্যাসীর কাছে বুঝি ?” মনা চুপ করিয়া থাকিত। তখন ঠাকুমা গর্জন করিয়া উঠিতেন “এমন মেয়ে ও ত দেখিনি ! সন্ন্যাসীর কাছে দিবারাত্র পড়ে থাকা এমন ত শুনিনি ! হতভাগা মেয়ে,—তারা কত কি জানে, তাদের কাছে কি থাকতে আছে,—তারা নজর দিলে অনাছিষ্টি হয়—আমুখ বিমুখ করে দিয়ে মেরে ফেলে,—কতবার বলি-রাক্কলী মেয়ে তবু শোনে না !” মন্দ কষ্ঠিত “ন। ঠাকুম, সপ্ল্যাগী ঠাকুর আমাকে কত ভালবাসেন, কত গল্প বলেন, — কত অাদর করেন--” ঠাকুমা সভয়ে বলিতেন, “ঐ রে, মেয়েটাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে বিপাকে ফেলবে দেখছি—” সন্ন্যাসীর ও বিপদেব অস্ত ছিল না । মন্দার মত স্থা একটি বন্ধু ছাড়া তাহার অসংখ্য ভক্তও জুটিয়ছিল । সময়ে সময়ে তাহাদের ভাক্তস্রোত যখন উচ্ছ,সিত হইয়া উঠিত তখন সন্ন্যাসী প্রমাদ গণিত । কিন্তু প্রকৃত বিপদ ছিল এই যে, ভক্তের প্রার্থন প্রায় ঔষধ-ৰাঞ্জারূপেই প্রকাশ পাইত। “সন্ন্যাসী ঠাকুর, আমার মেজবেীমার হজম হয় না” । “ আমার ছেলেটার পিলে হয়েছে”, “নীতিটা জয়-বিকারে মর মর”, “মেয়েট কেমন রোগ হয়ে যাচ্চে” ইত্যাকার রোগের বিবরণ ও তাহার পর ঔষধ প্রার্থনা, সকাল হইতে সন্ধ্যা পর্য্যন্ত -झेश्tग्न विद्रtभ ५[कि उ न! । সন্ন্যাসী বিস্মিত হইয়া ভাবিত, চিকিৎসাশাস্ত্রে তাহার এ অধিকার কবে হইতে ! সন্ন্যাসী । 6ఆ9 এতগুলা লোকের বিশ্বাস সে কেমন করিয়া বিনা প্রমাণে জন্মাইয়া দিয়াছে ! এবং এ বিশ্বাসের মূলই বা কি ? সে কিছুতেই ঔষধ দিতে সন্মত হইত না, কিন্তু ভক্তেরা নাছোড়বন্দ । অগত্যা প্রত্যেক প্রার্থকেই একটু করিয়া হোমের ভষ্ম দিয়া তুষ্ট করিতে হইত। তাহার ফল এই হইত, যাহারা বাচিবার তাহারা বাচিয়! যাইত । কিন্তু ইহাতেই সন্ন্যাসীর খ্যাতি বহুবিস্তৃত হইয়া পড়িল, এবং ঔষধ প্রার্থীর সংখ্যা ও দিন দিন বাড়িয়া চলিল । কিন্তু সব চেয়ে বড় বিপদ হইয়াছিল, মন্দাকে লইয়। সে এমন করিয়া হৃদয়কে অভিভূত করিয়া দেয় কেন,–সন্ন্যাসীর কঠিন প্রাণকে এমন করিয়া স্নেহ-কোমল প্রেমআৰ্দ্ৰ করিয়া দেয়, কিসের মোহে ! ভগবানের ধ্যান করিতে করিতে চোখের সম্মুখে ভাসিয়৷ উঠে মন্দার মুখ ; মন সমস্ত দিন উন্মুখ হইয়া থাকে, মন্দার লঘু-পদ-শব্দের প্রতীক্ষায় ! ংসারের মায়৷ কাটাইয়া এ কি মায়াবিনীর মোহ-পাশে আজ নুতন করিয়া বন্ধন । দুই হাত জোড় করিয়া সে কহে “দেবতা আমার ! যেমন করিয়া আমাকে সেবার সংসার হ’তে মুক্তি দিয়েছিলে, তেমনি করে এ নতুন বন্ধন কেটে দিয়ে আমাকে তোমার পায়ের তলায় নিয়ে চলে| !” সন্ন্যাসীর চারিপাশ্বে দেশের লোক ষে বিরক্তি এবং মন্দা যে আকর্ষণ গড়িয়া তুলিয়াছিল, সন্ন্যাসী একদিন স্থির করিল তাহা হইতে আপনাকে সেই রাত্রে সে মুক্তি দিবে।