পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/৩৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, একাদশ সংখ্যা । পরীণবাবু তার এক অনুচরের প্রতি চাহিয়া বলিলেন—“শুনচো শুIমলাল!” সমগ্র স্তাবকের দল বলিয়া উঠিল-ছিঃ —ছিঃ– একি অসন্মানের কথা !” পরাণবাবু আলবোলাব নল টানিতে টানিতে মোট গলায় বলিলেন -“কলিকালে উপকার করার ফল—এই !” সকলে বলিল –“যা বলেচেন!” পৰাণবাবু নন্দলালের দিকে চাহিয়া ক্রুদ্ধস্বরে বলিলেন – “যাও !—নালিস করে না ও-গে !” নন্দলাল একবার উদ্ধপানে চাহিয়া বলিল -- *এর বিচার তিনিষ্ট করবেন।” বলিয়া সে তথা হইতে দ্রুত চলিয়া গেল । পরাণবাবু একবাৰ স্তাবকম গুলীব দিকে চাহিয়া বলিলেন—“এ ছলে কি ?— এত আম্পর্ক কিসের ?” এক ব্যক্তি বলিল --“ও ‘বালামে’র গুণ!” পরাণবাবু একটু কৃপার হাসি হাসিয়া বলিলেন ; “তাই দেখচি !” R নন্দলাল শৈশবেই পিতৃহীন হয়। তাহার পিতা পশ্চিম অঞ্চলে বহুদিন চাকুরী করিতে করিতে অবশেষে সেই দেশেই বসবাস স্থাপন করিয়াছিলেন। তাছবি আরো কয়েকটী সন্তানাদি হইয়ছিল কিন্তু দু-এক বৎসরের হইতে না হইতে সবগুলিরই জীবন মুকুল অকালে ঝরিয়া পড়ে। ইহান্তে ননালালের পিতার, অর্থসঞ্চয়ের দিকে তেমন দৃষ্টি ছিল না—তিনি উপার্জিত অর্থের অধিকাংশই লোকহিতে ব্যয় করিতেন । কিন্তু দশ বৎসর পরে বিধাতা সেই নিরানন্দ সংসারে আবার একটি স্নেহের ধন সস্তান হার-জিত । సె: 3 পঠাইয়া দিয়া পিতামাতার শোকদগ্ধ প্রাণে আনন্দরস সঞ্চারিত করিয়া তুলিলেন। শোক জীর্ণ প্রৌঢ় কাশিনাথ কিন্তু ‘ভাঙিয়া’ পড়িয়াছিলেন । নন্দলালকে বেশী দিন বুকে করিয়া জুড়াই বার অবসর পারলেন না !—পূর্ণিমার এক স্নিগ্ধ রাত্রে তার ডাক পড়িল । অস্তিমকালে অতৃপ্ত পিতৃস্নেহ মায়ার শৃঙ্খলটি আরো জটিলতর করিয়া তুলিয়াছিল ! মৃত্যুকালে, পত্নীৰ হাতখানি ধরিয়া দুই চক্ষে ধারা বহাইয়া বলিলেন—“তুলদি ! ছেলে বুকে ধরে মুখ ভোগ করবে কপাল আমাৰ নয় ! —তবু একে যে রেখে যেতে পারলাম, এই ঢের !" নন্দলাল তখন পাচ বৎসবের । পিতৃকুলে তাহার তেমন কোন আত্মীয় ছিল না। যাহারা ছিলেন র্তাহাবা যে অনাথ শিশুর "রক্ষক’ হইবেন এমন সম্ভাবন ছিল না । সুতরাং তুলসী সহোদর পরাণবাবুর শরণাপন্ন হইলেন-হাজার হ’ক তিনি "মারপেটের ভাই ! পরাণবাবু লোকট খুব “পাকা । তিনি কলিকাতায় বাস করেন। পৈতৃক বিষয় সম্পত্তি যৎকিঞ্চিৎ আছে বটে কিন্তু তাহাতে কলিকাতার বিলাস ব্যয় সস্কুলীন হয় না। অথচ পরাণবাবুর সংসারিক অবস্থ বেশ স্বচ্ছল, —বরং স্বচ্ছলেরও বেশী । ইহাতে ‘পাচজনে” পাচ রকম কথা বলিলেও বাহিবে তাছার প্রতিপত্তি অটুট— ! তুলসী পাঁচ বছরের ছেলে লইয়া ভায়ের ংসারে আসিয়া আশ্রয় লইলেন । এই আশ্রয় গ্রহণের মূলে দৈন্তের দংশন জাল যে এতটুকু ছিলনা এবং অভিভাবকের একমাত্র অভাবই যে