পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/৪৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৯৭২ দেখে,—ভাবে,--আবার তাছার পুথির মধ্যে তন্ময় হইয় থাকে ! আবার যখন তাহার শাস্তদৃষ্টি উৎসারিত করিয়া চাহে, তখন দেখে জ্যোতিৰ্ম্ময়ী-চলিয়া গিয়াছে—আর সেখানে হয়ত দাড়াইয়া আছে,—একদৃষ্টে তাহারি দিকে চাহিয়, একট চীরপরিহিত রাখাল বালক ! গ্রামে এমন সময়ে একদিন হাহাকার উঠিল—মহামারীতে গ্রাম উৎসন্ন যাইতে বসিল ! পুথি বন্ধ করিয়া, বী৭ ফেলিয়া, সন্ন্যাসী সেই মৃত্যু তরঙ্গের মধ্যে বাপাইয়। পড়িল । সেখানে তাহার সহায় মিলিল জ্যোতিৰ্ম্ময়ী,—আর সন্ন্যাসীর ডাকে দল বাধিয়া আসিল গ্রামের যুবকেরা । তার পর চলিল পীড়িতের সেবা, পথ্য ও ঔষধ বিতরণ ! —সন্ন্যাসীর আদেশ মত গ্রাম্য যুবকেরা ঔষধ ও পথ্য বিতরণ করে—শবদাহ করে,—কেহ কেহ রোগীর সেবাও করে ! মুমুধুর শিয়রে বীজনরত জ্যোতিৰ্ম্ময়ী,— আর প্রতি গৃহস্থের বাড়ীতে রোগীর তত্ত্বাবধান ও সেবা করিতে ব্যস্ত, তরুণ সন্ন্যাসী ! উভয়েই নীরব, উভয়েরই দৃষ্টি পরস্পরের গুণমুগ্ধ,—কুতজ্ঞতা প্রকাশক ! কি অকুণ্ঠ তৃপ্তি, কি আনন্দ উভয়ের হৃদয়ে ! ( २ ) সেদিন বীজনরত জ্যোতিৰ্ম্ময়ী দেখিল, কখন রজনীর শেষযাম অতিবাহিত হইয়া গিয়াছে—কিন্তু সে তরুণ সন্ন্যাসী তো সেবা ও শাস্তি লইয়া ফিরিয়া আইসে নাই । সার গ্রাম প্রদক্ষিণ করিয়া তার যে এখানেই আসিবার কথা ছিল ! সেবানিরতা মাতৃহৃদয়খানি আজি এক অজ্ঞাত আশঙ্কায় ব্যথিত হইয়া উঠিল । নত ভারতী । চৈত্র, ১৩১৭ মস্তকে জ্যোতিৰ্ম্ময়ী দেখিল প্রভাতের স্নিগ্ধ করম্পর্শে রোগী কখন ঘুমাইয়া পড়িয়াছে – মুখে তার আরাম ও শাস্তির চিন্ধু ! তাছার অন্তৰ বীণার তন্ত্রীতে তন্ত্রীতে কি যেন করুণ সঙ্গীতের মুর বাজিয়া উঠিল -- সে যেন সেই চির পরিচিত পুরাতন আবাহন বাণী “ওগো, এস, এস, এস !” ( 0 ) পাশ্বে মুরবাধা বাণ—মুহূৰ্ত্তেক পূৰ্ব্বে বুঝি গায়কের শাস্ত করম্পর্শে মৃদ্ধঝঙ্কৃত হইয়৷ উঠিয়াছিল । আর অদূরে আস্তৃত গৈরিক অঞ্চলোপরি তন্ত্রানিমালিত নয়নে ও কে ওগো ! জীবন ও মৃত্যুর পুণ্য সন্ধিস্থলে অবস্থিত ; —সেই দীনের বান্ধব, আৰ্ত্তের সেৰক, তরুণ সন্ন্যাসী ! জ্যোতিৰ্ম্ময়ী পলকশূন্ত নয়নে চাহিয়া চাহিয়া দেখিল,—তাহার আননে উচ্ছসিত শাস্তির পুণ্যলেখা ! সে তরুণ তাপসমূৰ্ত্তি জ্যোতিৰ্ম্ময়ার নিমেষহীন নয়নের সন্মুখে দেবতার মূৰ্ত্তির মত উদ্ভাসিত হইয়া উঠিল ! কোন পাষাণ মন্দিরের অভ্যস্তরে এই দেবতার অধিষ্ঠান ভূমিরে! সসন্ত্রমে, ধীরে, অতি ধীরে জ্যোতিৰ্ম্ময়ী সেই তরুণ তাপসের চরণ স্পশ করিল !— এতটুকু চরণ ধূলির ভিখারিণী সে ! চক্ষু চাহিয়া সন্ন্যাসী দেখিল, কে আসিস্থাছে ! ইঙ্গিত পাইয়া জ্যোতিৰ্ম্ময়ী. পুথি আর বীণ কুড়াইয়া সন্ন্যাসীর হাতের কাছে আনিল । মৃত্ত্বকণ্ঠে সন্ন্যাসী বলিল,—