পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/৪৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

家* উত্যক্ত হইয়া উঠিল । “তোমার বাবার সঙ্গে বোধ হচ্চে সে ঝগড়া করেচে ? নিশ্চয়ই তাই না?” অশ্রুজলে শাস্তির দৃষ্টি লোপ পাইয়া আসিতেছিল । সে উত্তর দিল না । বিরক্ত, বিস্থিত, অমৃতপ্ত নীরদ কি বলিতে যাইতেছিল এমন সময় বিদ্যুৎ হানিয়া কড় কড় শব্দে মেঘ ডাকিয়া উঠিল। আকাশ ঘন মেখে ছাইরা আদিতেছে । নীরদ বিপরের মত খানিকক্ষণ জানালার ভিতর দিয়া বাহির আকাশের দিকে চাহিয়া রহিল তারপর আবার শাস্তির দিকে চাহিয়া দেখিল—নিঃশব্দে উদাস দৃষ্টিতে সে চাহিয়া আছে। সেই অর্থহীন উদভ্ৰান্ত দৃষ্টি তাছার বক্ষে সজোরে আঘাত করিল । সেই শান্তি ! সুন্দর চঞ্চল, আনন্দময় ংসার মুখোপ্তানের সেই ফুটন্ত সুবাসিত ফুলটি দেবতার পায়ের নিৰ্ম্মাল্য টুকুরই মত পবিত্ৰ ! সংসারের এই সমরক্ষেত্রের আঘাত হইতে সেও রক্ষা পাইল না ! কি বিচিত্র এই জগতের গতি । সহসা নীরদ জিজ্ঞাসা করিল-“তোমার মা বাবা তো ভাল আছেন শান্তি ? তাদের কাছে তো গেলেও হতো ? তার কেন তোমায় এখানে থাকতে দিয়েছেন ?” আবার দমিত অশ্রু উথলিয়া উঠিতে চাহিল, জোর করিয়া চোখের জল চাপিয়া রাখিয়া সে মাখা নীচু করিয়া রছিল। নীরদ একটুখানি উত্তরের অপেক্ষা করিয়া থাকিয়া তারপর হঠাৎ মনে ঠিক করিয়া ফেলিল, মহৎ প্রকৃতির লোক রজনীনাথের সহিত তাহার লঘুপ্ৰকৃতির জামাত হেমের বনিৰনাও না-হওয়া মোটেই আশ্চৰ্য্য বা অসম্ভব নয় । দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া সমবেদন ও ভারতী । וכ9י ,55: আত্মগ্লানি মিশ্রিত 5iहिब्र রহিল । শীতের অপরাহ্ল মেঘাড়ম্বরে বর্ষারজনীর ক্টায় অন্ধকার হইয়া আসিতেছিল । আসন্ন বর্ষণের একটা বড় রকম যোগাড় হুইয়! উঠিতেছে। ফুৰ্য্যোগমন্ত্রী প্রকৃতির পানে চাহিয়া নীরদের হঠাৎ স্মরণ হইল তাঁহাকে যাইতে হইবে, এখানে সে পুরুষহীনগৃহে একজন বাহিরের লোকমাত্র । অথচ শাস্তিকে এই দুৰ্য্যোগ রাত্রে একা ফেলিয়া চলিয়া যাওয়াও তো তাহার পক্ষে কৰ্ত্তব্য হয় না। ভাবিয়া চিন্তিয়া জিজ্ঞাসা করিল "হেম যদি ম। আসে রাত্রে কি একাই থাকো ? চাকররা বিশ্বাসীতে ?” শাস্তির মান অধরে অতি স্বাক্ষ বিধাদের এক ফোটা হাসি ফুটিতে ফুটিতে বিদ্যুতের ক্ষণ রেখা পাতের ন্যায় চারিদিকের পুঞ্জীকৃত অন্ধকার রাশির মধ্যে মিলাইয়া গেল । *চাকর তো নেই, একজন ঝি আছে সেই থাকে, সে খুব ভাল।” নীরদ আবার দণ্ডাহতের মত চমকিয়া উঠিল । কষ্টে আত্মসম্বরণ করিয়া লইয়া বলিল “আমি তোমার এ অবস্থায় একা এই বনের মধ্যে ফেলে তো চলে যেতে পারি না,—ন হয় —” তাহার কথা শেষ হইতে না দিয়াই তড়িতাহতের মত চমকিয়া উঠিয়া শান্তি তাহার আর্তবৃষ্টি মেলিয়া ঈষৎ উৎকণ্ঠে বলিয়া উঠিল “নানা আমার কোন সাহায্য আপনি কৰ্ব্বেন না, আমিতে কত দিনই এই রকম থাকি।” পাছে হেমেন্দ্র আসিয়া আবার কোন একটা বিরুদ্ধভাব ইহার সম্বন্ধে মনে আনে সেইজন্তই হঠাৎ শাস্তি এতখানি উত্তেজন|ব্যাকুল হইয় উঠিল। কিন্তু নীরদ তাহার করুণচক্ষে